ডিপোতে পুঁতে রাখা হয়েছিল বাস মালিকের লাশ

পরিবহন ব্যবসায়ী আনারুল হোসেন শিকদারকে হত্যার পর তুরাগের বাস ডিপোতে পুঁতে রাখা হয়েছিল তার লাশ । আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাষ্য মতে, বাসের চালক ও নিরাপত্তাকর্মীর হাতেনির্মমভাবে খুন হয়েছেন ব্যবসায়ী আনারুল ।

গত ১৭ জানুয়ারি নিখোঁজের পরদিন তার পরিবারের সদস্যরা ঢাকার তুরাগ থানায় জিডি করেন । এর পর তদন্তে নামে পুলিশ। দীর্ঘ চার মাস তদন্তের পর তুরাগ থানা পুলিশ সন্দেহভাজন তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা শিকার করে তারা। পরে তাদের দেখানো স্থান থেকে রোববার আনারুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার তিনজন হলো– সবুজ, শাকিল ও কালাম। তিনজনই রাইদা পরিবহনের বাসচালক। শনিবার রাতে সবুজকে প্রথমে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে শাকিল ও কালামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই বিডিজবসের কর্মকর্তা দেলোয়ার শিকদার তুরাগ থানায় হত্যা মামলা করেছেন।

পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, আসামিরা মালিককে হত্যা করার পরও স্বাভাবিকভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে আসছিল। পালিয়ে না যাওয়ায় তাদের সন্দেহের তালিকায় আনা হয়নি। তবে গত কয়েক দিন সবুজের কথাবার্তা ও আচরণে সন্দেহ হয় তদন্ত-সংশ্লিষ্টদের। এক পর্যায়ে সবুজসহ তিনজনই পালিয়ে যায়। শনিবার তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যারহস্যের জট খোলে।

নিহতের ভাতিজা তানভির শিকদার সমকালের বরাতে জানান, নিখোঁজের পর থেকে আমাদের সন্দেহ হয় ডিপো নিয়ে। একাধিকবার নিরাপত্তাকর্মী আসাদুল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু সে জানায়, চাচা ঘটনার দিন সকালে তার কাছ থেকে কিস্তির ৩১ হাজার টাকা নিয়ে বেরিয়ে যান ।

ঘটনার ক’দিন আগে চাচা আমাকে জানান, সবুজের কাছে আট লাখ টাকা ও ডিপোর নিরাপত্তাকর্মী আসাদুল্লাহর কাছে বাস বিক্রির ১৮ লাখ টাকা নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। তারা ঠিকমতো কিস্তি দিতে পারছে না। এ নিয়েই আসাদুল্লাহ ও সবুজ চাচাকে হত্যা করেছে।

আনারুল শিকদারের গ্রামের বাড়ি বরিশাল সদরে। স্ত্রী ও তিন ছেলেকে নিয়ে তিনি ঢাকার উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ২৬ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাড়িতে বসবাস করতেন। রাইদা কোম্পানিকে কয়েকটি গাড়ি কিনে ভাড়া দিয়েছিলেন।

তুরাগ থানার এসআই মামুনুর রশিদ জানান, রোববার বিকেলে ব্যবসায়ী আনারুলের লাশ মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।