ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ প্রক্রিয়া চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন এ নির্বাচনে।
ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বলয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সোমবার রাত ৮টা থেকে কার্যকর করা হয়। এটি চলবে টানা ৩৪ ঘণ্টা, অর্থাৎ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত।
শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, নীলক্ষেত, পলাশী, ফুলার রোডসহ ক্যাম্পাসের সব প্রবেশপথে মঙ্গলবার সকাল থেকেই কঠোর অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশের পাশাপাশি আনসার ও বিজিবি সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রবেশের আগে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অনুমোদিত ব্যক্তিদের পরিচয়পত্র যাচাই করা হচ্ছে। এমনকি শিক্ষক ও কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যদেরও পরিচয়পত্রের ফটোকপি দেখাতে হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত বা জরুরি সেবায় নিয়োজিত গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো যানবাহনকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিটি যানবাহনে তল্লাশি চলছে।
সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে ভোটারদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শিক্ষার্থীরা প্রবেশপথে লাইনে দাঁড়িয়ে পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভেতরে প্রবেশ করছেন। ভোটকেন্দ্র এলাকায় সক্রিয় উপস্থিতি থাকলেও সামগ্রিক পরিবেশ শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, মোট ৮টি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৩৯,৭৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২০,৮৭৩ জন এবং ছাত্রী ১৮,৯০২ জন।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৪৭১ জন প্রার্থী, যার মধ্যে নারী প্রার্থী ৬২ জন।
• সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, তাদের মধ্যে নারী ৫ জন।
• সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন, তাদের মধ্যে নারী ১ জন।
• সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন, তাদের মধ্যে নারী ৪ জন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নির্বাচনী দিনে শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, নীলক্ষেত, শিববাড়ি, ফুলার রোড, উদয়ন স্কুল ও পলাশী ক্রসিংসহ সব প্রবেশপথে সাধারণ মানুষের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে।
শুধুমাত্র বৈধ আইডিধারী বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই প্রবেশ করতে পারবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। গেট ও আশপাশের এলাকায় যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা রোধে তারা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
দীর্ঘ ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত এ ডাকসু নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনেক। প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তা এবং শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখন সবার নজর ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর শান্তিপূর্ণভাবে ফল ঘোষণার দিকে।
Leave a comment