ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে সাদিক কায়েমের বিপুল জয়ের পর এবার সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদেও জয় পেলেন শিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর)বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ছাত্রশিবিরের নেতা এস এম ফরহাদ পেয়েছেন ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের প্রার্থী তানভীর বারী হামীম পান ৫ হাজার ২৮৩ ভোট। অন্যদিকে প্রতিরোধ পর্ষদ প্রার্থী মেঘমল্লার বসু অর্জন করেন ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট।
ফরহাদের এই জয়কে অনেকে শিবির সমর্থিত জোটের ধারাবাহিক অগ্রযাত্রার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন। ভিপি ও জিএস পদে একই জোটের প্রার্থীদের জয় বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে।
সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ছাত্রশিবিরের নেতা মুহা. মহিউদ্দীন খান জয়ী হয়েছেন ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়ে। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৪ ভোট।
এই ফলাফলের মাধ্যমে ডাকসুর তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদ—ভিপি, জিএস ও এজিএস—সবই শিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের দখলে এসেছে।
ডাকসুর এই নির্বাচনী ফলাফলকে পর্যবেক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতির বড় ধরনের রূপান্তর হিসেবে দেখছেন। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের প্রভাবশালী অবস্থানের বাইরে শিবির সমর্থিত প্রার্থীদের এভাবে ধারাবাহিক বিজয় ভবিষ্যতের ছাত্র রাজনীতির ধারা পাল্টে দিতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
শিক্ষার্থীদের একাংশ মনে করছেন, এবার ভোটের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে যে শিক্ষার্থীরা বিকল্প নেতৃত্বে আস্থা রাখছে। তবে সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন, শক্তিশালী সংগঠিত প্রচার এবং বহিরাগত প্রভাব ছাড়া এ ধরনের ফলাফল সম্ভব নয়।
বিজয়ের পর এস এম ফরহাদ বলেন, “আমরা ডাকসুকে শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার প্রকৃত মঞ্চ হিসেবে গড়ে তুলব। এই বিজয় ছাত্রসমাজের।”
মুহা. মহিউদ্দীন খানও প্রতিশ্রুতি দেন, “আমরা প্রতিটি শিক্ষার্থীর সমস্যা নিয়ে কাজ করব। একাডেমিক উন্নয়ন, আবাসন সংকট নিরসন ও স্বচ্ছ ক্যাম্পাস ব্যবস্থাপনায় অগ্রাধিকার দেব।”
ডাকসুর তিনটি শীর্ষ পদে একই জোটের প্রার্থীদের জয় ডাকসুর কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে, সেটি এখন সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। অনেকেই মনে করছেন, এই নেতৃত্ব বিশ্ববিদ্যালয়কে সক্রিয় ছাত্ররাজনীতির নতুন অধ্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।
Leave a comment