মো. আলমগীর, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ে মাত্র একদিনের ব্যবধানে তিনজনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২২ মার্চ) রাতে এবং রবিবার (২৩ মার্চ) সকালে পৃথক তিনটি ঘটনায় এক যুবক, এক কিশোরী ও এক শিশু আত্মহত্যা করেছে।
প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের লস্করা গ্রামে। পারিবারিক কলহের জেরে শনিবার রাতে রাজু আহমেদ (২৬) নামে এক যুবক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজু আহমেদ দুই বছর আগে আব্দুল খালেকের মেয়ে রানীর সঙ্গে বিয়ে করেন এবং শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই হিসেবে বসবাস করতেন। শনিবার রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার পর দুজন আলাদা ঘরে ঘুমাতে যান।
রবিবার সকালে স্ত্রী রানী রাজুকে ডাকতে গিয়ে দেখেন, তার ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পরও সাড়া না পাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখতে পান, রাজু ঘরের বাঁশের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছেন।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি মো. শহিদুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে রাজু আত্মহত্যা করেছেন। তবে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নে। পূজা রানী (১৫) নামে এক কিশোরী নিজ শয়নকক্ষে গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় বাড়িতে কেউ ছিল না। তবে আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।
সদর থানার পুলিশ জানায়, কিশোরীর আত্মহত্যার কারণ জানতে তদন্ত চলছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তৃতীয় ঘটনাটি ঘটেছে পীরগঞ্জ উপজেলার করনা ছোট মহেশপুর গ্রামে। মায়ের সামান্য বকাঝকায় অভিমান করে আসাদুল (১১) নামে এক শিশু আত্মহত্যা করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে মায়ের বকাঝকায় অভিমান করে শিশুটি বাড়ি থেকে কিছু দূরে গিয়ে গাছের ডালে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। রবিবার সকালে পরিবারের লোকজন তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
পীরগঞ্জ থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। মায়ের সামান্য বকাঝকায় শিশুটি আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে। তবে আরও তদন্ত করা হচ্ছে।
একই দিনে তিনটি আত্মহত্যার ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারিবারিক কলহ, মানসিক চাপ ও সামাজিক বন্ধনের অভাবের কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে পারিবারিক সচেতনতা এবং মানসিক সহায়তা জরুরি।
Leave a comment