টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে স্ত্রীকে কুড়াল দিয়ে নির্মমভাবে হত্যার পর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন স্বামী। সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রোজী বেগম (৩৫) ওই এলাকার মুচির চালা গ্রামের হাসমত আলীর মেয়ে।
ঘটনার পর সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে হত্যার দায় স্বীকার করে মির্জাপুর থানায় হাজির হন রোজীর স্বামী লতিফ মিয়া (৪২)। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) আদালতে হাজির হয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন লতিফ। মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম) বলেন, “আমরা লতিফকে গ্রেফতারের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তবে তিনি রাতেই থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন এবং আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লতিফ মিয়া দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। প্রবাসে থাকার সময় স্ত্রী রোজী বেগম এক ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। দেশে ফেরার পর লতিফ স্ত্রীকে এ সম্পর্ক থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন।
এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্য চলছিল। কয়েক মাস আগে রোজী বেগম বাবার বাড়ি চলে যান। গত রবিবার স্থানীয়ভাবে সালিসের মাধ্যমে তাকে স্বামীর বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়।
কিন্তু সোমবার দুপুরে আবারও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে লতিফ মিয়া কুড়াল দিয়ে রোজীকে কুপিয়ে হত্যা করেন। ঘটনার পর তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
এ হত্যাকাণ্ডে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, স্বামী-স্ত্রীর দীর্ঘদিনের বিরোধ ও অবিশ্বাসের কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। অনেকে এটিকে পারিবারিক কলহ ও সামাজিক অবক্ষয়ের ভয়াবহ উদাহরণ হিসেবে দেখছেন।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওসি রাশেদুল ইসলাম বলেন, “মামলার আইনি প্রক্রিয়া চলছে। এটি একটি চরম পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা। অপরাধী স্বামীকে বিচারের আওতায় আনা হবে।” সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, পারিবারিক বন্ধন ও সম্পর্ক রক্ষায় সচেতনতা বাড়ানো না গেলে এ ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে।
Leave a comment