ইসলাম ধর্মে নামাজ কেবল একটি ইবাদত নয়, বরং মুসলমানের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিশেষত জুমার নামাজের গুরুত্ব অন্য ফরজ নামাজের তুলনায় আরও বেশি। নিয়মিত জুমার নামাজ আদায় না করলে তা আত্মিক ও সামাজিক জীবনে গুরুতর প্রভাব ফেলে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তুমি সূর্য হেলার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামাজ কায়েম কর এবং ফজরের নামাজ কায়েম কর। নিশ্চয়ই ফজরের নামাজে সমাবেশ ঘটে।” (সূরা বনি ইসরাঈল : ৭৮)
নবীজি হজরত মুহাম্মদ (সা.) জুমার ফজিলত বর্ণনা করেছেন। হাদিসে বর্ণিত, জুমার দিনে প্রথম প্রহরে মসজিদে যাওয়া হলে উট কোরবানির সওয়াব, দ্বিতীয় প্রহরে গেলে গরু, তৃতীয় প্রহরে গেলে ভেড়া, চতুর্থ প্রহরে গেলে মুরগি এবং পঞ্চম প্রহরে গেলে ডিম কোরবানির সওয়াব মিলবে। ইমামের খুতবা শোনার সময় ফেরেশতারাও আমল লিখে না, শুধুমাত্র খুতবা শুনতে থাকেন। (বোখারি : ৮৮১)
হাদিসে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে পরপর তিনটি জুমা নামাজ পরিত্যাগ করলে আল্লাহ তার অন্তরে মোহর এঁটে দেন। এই অবস্থায় ব্যক্তি আত্মভোলা হয়ে যায় এবং সংশোধন লাভের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত থাকে। (তিরমিজি : ৫০০)
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি তিন জুমা অনাবশ্যকভাবে ত্যাগ করে, সে ইসলামের সঠিক পথে পিছিয়ে যায়। (মুসলিম) এছাড়া নবীজি বলেছেন, চার শ্রেণির লোক ছাড়া—ক্রীতদাস, স্ত্রীলোক, অপ্রাপ্তবয়স্ক, মুসাফির ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি—জুমার নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গোনাহ। (আবু দাউদ)
উল্লেখযোগ্যভাবে, হজরত উমর (রা.) এবং হজরত আলি (রা.) নামাজ ত্যাগকারীকে কাফের হিসেবে উল্লেখ করেছেন। (বায়হাকি : ১৫৫৯, ৬২৯১) কোরআন ও সুন্নাহর দলিলগুলো স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে, ফরজ নামাজ ত্যাগকারী ব্যক্তি ইসলামের মূল পথ থেকে বিচ্যুত এবং আত্মিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তাই মুসলমানদের জন্য জুমা এবং অন্যান্য ওয়াক্তের ফরজ নামাজের প্রতি সতর্ক, নিয়মিত ও ভক্তিপূর্ণ থাকার গুরুত্ব অপরিসীম।
Leave a comment