জামালপুর সদর উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে চোর অপবাদ দিয়ে এক রাজমিস্ত্রিকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের একটি ভিডিও শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি আলোচনায় আসে।
নির্যাতনের শিকার মো. মামুন (৩০) শাহবাজপুর ইউনিয়নের গণেশপুর এলাকার আবদুল হাকিমের ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। গত বুধবার রাতে শাহবাজপুর পূর্ব পাড়া এলাকার হাসমত তালুকদারের বাড়িতে তাঁকে মারধর করা হয়। গুরুতর আহত মামুনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ মো. ইলিয়াস (২৫) ও মো. মিজানুর রহমানকে আটক করেছে।
নির্যাতনের ২ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, খালি গায়ে মামুনকে কয়েকজন ব্যক্তি লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন। তিনি হাত দিয়ে আঘাত প্রতিহত করার চেষ্টা করলেও আঘাত অব্যাহত ছিল। একপর্যায়ে তাঁকে বিছানায় শুইয়ে, পরে মেঝেতে ফেলে আরও মারধর করা হয়। আশপাশে থাকা কেউ তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মামুন হাসমত তালুকদারের বাড়িতে নির্মাণকাজ করেছিলেন এবং তাঁর কাছে টাকা পাওনা ছিল। বুধবার সন্ধ্যায় টাকা দেওয়ার কথা বলে হাসমত তাঁকে ডেকে নেন। পরে দুজনের মধ্যে বিতর্ক হলে হাসমত ও তাঁর স্বজনেরা মামুনকে চোর অপবাদ দিয়ে মারধর করেন।
মামুনের প্রতিবেশী তাহের আলী বলেন, ‘কেবল পেটানোই হয়নি, তাঁর দুই পায়ের মাঝে রড ঢোকানোরও চেষ্টা করা হয়েছে। পাওনা টাকা চাওয়ার অপরাধে তাঁকে চোর বানিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। ভিডিও দেখলেই বোঝা যায়, কতটা অমানবিক ঘটনা ঘটেছে।’
ঘটনার পর থেকে হাসমত তালুকদারের মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে এবং তিনি পলাতক থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নারায়ণপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) মনজুরুল হক বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে মামুনকে মারধর করা হয়। ইতিমধ্যে দুজনকে আটক করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর পরিবার অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অন্য অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা চলছে।’
মামুনের মা মাজেদা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলে মিস্ত্রির কাজ করে আমাদের সংসার চালায়। সে টাকা চাইতে গিয়ে চোরের অপবাদে নির্যাতিত হলো। এখন সে হাঁটতেও পারছে না। আমি এর বিচার চাই, যেন গরিবদের সঙ্গে আর এমনটা না হয়।’
Leave a comment