পাঁচ দিনের এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে জাপানে পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (২৭ অক্টোবর) টোকিও পৌঁছালে তাকে রাজকীয়ভাবে স্বাগত জানানো হয়।
এটি তার সফরের দ্বিতীয় ধাপ, যেখানে মূল আলোচ্য বিষয়- চীনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের সমাধান। সফরের প্রথম ধাপে মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে ট্রাম্প একাধিক বাণিজ্য ও খনিজসম্পদ চুক্তি সই করেন। তার পরবর্তী গন্তব্য দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়ংজু, যেখানে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি প্রাথমিক কাঠামোগত সমঝোতা চূড়ান্ত হয়েছে। এই চুক্তির ফলে নতুন শুল্ক আরোপ ও বিরল খনিজ রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আপাতত স্থগিত থাকবে। খবরটি প্রকাশের পরই এশীয় শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “প্রেসিডেন্ট শির প্রতি আমার অনেক শ্রদ্ধা আছে। আমি বিশ্বাস করি আমরা পারস্পরিকভাবে উপকারী একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে পারব।” টোকিও পৌঁছানোর পর ট্রাম্পের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পরে তিনি ইম্পেরিয়াল প্যালেসে জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং করমর্দন শেষে যৌথ আলোকচিত্রে অংশ নেন।
জাপানের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ট্রাম্পের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসবেন। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে পিকআপ ট্রাক, সয়াবিন ও প্রাকৃতিক গ্যাস কেনার প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারের অংশ হিসেবে জাপান ৫৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র জাপানের পণ্যে আরোপিত কিছু আমদানি শুল্ক শিথিল করতে সম্মত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, জাপানে ট্রাম্পের এই সফর কেবল বাণিজ্য সম্পর্ক নয়, বরং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকেও নতুন দিকনির্দেশনা দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি ইঙ্গিত দিয়েছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা বাজেট বাস্তবায়নের পথে তার সরকার দ্রুত এগোবে।
ট্রাম্পের এশিয়া সফরের শেষ গন্তব্য দক্ষিণ কোরিয়া, যেখানে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বহুল আলোচিত বৈঠক করবেন। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই বৈঠক এশিয়ার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভারসাম্যে নতুন মোড় আনতে পারে এবং মার্কিন-চীন সম্পর্কের উত্তেজনা প্রশমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
Leave a comment