কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের নাগরিক সমাবেশে হামলার ঘটনায় জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা সারজিস আলমকে দায়ী করেছেন বিপ্লবী পরিষদের আহ্বায়ক খোমেনী ইহসান। শনিবার বিকালে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসানকে লক্ষ্য করে অতর্কিত হামলা হয়।
হামলার নেপথ্যে কারা?
এক ফেসবুক পোস্টে খোমেনী ইহসান দাবি করেন, হামলাকারীরা আগে যুবদলের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও বর্তমানে সারজিস আলমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তিনি বলেন, “জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সমাবেশ বানচালের ষড়যন্ত্রে সরাসরি জড়িত ছিলেন সারজিস। এই প্রমাণ হিসেবে আমি একটি অডিও ক্লিপ সরকারের কাছে জমা দিয়েছি, যেখানে তার এই ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে।”
খোমেনী আরও জানান, “সারজিস কোটা আন্দোলনের সময়ও বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। বর্তমান সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ করে আমাদের আন্দোলন ব্যর্থ করার চেষ্টা করেছিলেন।”
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন ফারুক হাসান। বক্তব্যে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারব্যবস্থার সমালোচনা করে বলেন, “শেখ হাসিনার সংবিধান ছুড়ে ফেলে বিপ্লবী সরকার প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য।”
ফারুক হাসান অভিযোগ করেন, বক্তব্য শেষ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ছাত্রদলের নেতারা তার ওপর হামলা চালায়। আহত অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে তিনি বলেন, “আমার বক্তব্যে সত্য তুলে ধরার কারণেই তারা আমার ওপর চড়াও হয়েছে। তারা আমার মোবাইল এবং মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়েছে।”
শহিদ পরিবার ও সারজিসের ‘ব্যবসা’
আরেকটি পোস্টে খোমেনী ইহসান অভিযোগ করেন, “সারজিস আলম শহিদ পরিবারদের ব্যবহার করে তার স্বার্থ উদ্ধার করার চেষ্টা করছেন। আমাদের সমাবেশে এই পরিবারগুলো অংশ নেওয়ায় তার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণে টান পড়েছে।”
খোমেনী বলেন, “যেসব শহিদ পরিবার আগে সাহায্যের জন্য সারজিসের দ্বারস্থ হতো, তারা এখন নতুন প্ল্যাটফর্ম পেয়েছে। এতে তার রাজনৈতিক ব্যবসায় ভাটা পড়েছে।”
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের অবস্থান
সমাবেশে হামলা এবং এর পেছনে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। খোমেনী ইহসান বলেন, “আমাদের সমাবেশে হামলা করা হলেও এর দায় আমাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে সারজিসের সহযোগীরা। তবে আমরা জনগণের কাছে সত্য তুলে ধরেছি।”
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের এই নাগরিক সমাবেশে জুলাই হত্যাকাণ্ডসহ একাধিক রাজনৈতিক হত্যার বিচার, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বিপ্লবী সরকার গঠন এবং বর্তমান সরকার ভেঙে নতুন রূপরেখা তৈরির দাবি জানানো হয়।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বাড়ছে। অভিযোগের সত্যতা যাচাই এবং ঘটনার পেছনের কারণ খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে বলে জানা গেছে।
Leave a comment