Home অর্থনীতি চীনের প্রতিশোধমূলক শুল্ক মার্কিন অর্থনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে
অর্থনীতিআন্তর্জাতিকযুক্তরাষ্ট্র

চীনের প্রতিশোধমূলক শুল্ক মার্কিন অর্থনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে

Share
Share

যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চীনের প্রতিশোধমূলক শুল্ক কার্যকর হয়েছে। এশিয়ার বৃহৎ অর্থনীতির দেশটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশ করেছে, যা আগে ছিল ৩৪ শতাংশ।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতিতে চীনের ওপর কয়েক ধাপে শুল্ক আরোপ করার জবাবেই এই শুল্ক কার্যকর করেছে দেশটি। তবে এ শুল্ক আরোপে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় চীনের ওপরই বেশি প্রভাব ফেলবে।

গত বছরের হিসাব অনুযায়ী ইঙ্গিত দেয় উচ্চ শুল্ক চীনা ব্যবসা-বাণিজ্যকে আরও বড় ক্ষতির মুখে ফেলবে। কেননা গত বছর চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৪ হাজার কোটি ডলার মূল্যের পণ্য বিক্রি করেছে। একই সময় মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো চীনের কাছে যে পরিমাণ পণ্য বিক্রি করেছে, এটি (চীনের বিক্রি) তার প্রায় তিন গুণ। তবে বিশ্লেষকদের মতে, বাস্তবতা এর চেয়ে অনেক বেশি জটিল।

তারা বলছেন, এই ধরনের উচ্চ হারের শুল্ক আরোপ করা হলে চীনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করে লাভ করা প্রায় অসম্ভব।

অক্সফোর্ড ইকোনমিকস কনসালটেন্সির লুইস লু বলেন, ইতোমধ্যেই এই অতিরিক্ত শুল্কের প্রভাবে পড়েছে।

চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো বাধ্য হয়ে স্থানীয় ভোক্তাদের কাছে পণ্য বিক্রি করছে। কারণ অন্যান্য দেশগুলো ইতোমধ্যে চীনা পণ্যের ঢল থামানোর জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে। চীনের অর্থনীতিতে রপ্তানি একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত, তাই নীতিনির্ধারকদের দায়িত্ব হবে অভ্যন্তরীণ ভোক্তা চাহিদা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া। যেহেতু চীনের অর্থনীতি রপ্তানিনির্ভর, তাই এই অতিরিক্ত শুল্কের চাপ সামলানো দেশটির জন্য কঠিন হতে পারে। কারণ চীনের অর্থনীতি বর্তমানে মূল্যহ্রাস বা ডিফ্লেশনের মধ্যে রয়েছে, বলে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য নীতিবিষয়ক অধ্যাপক এসওয়ার প্রসাদ বলেছেন ।

এই শুল্কহার চলমান থাকলে চীনের মুদ্রা ইউয়ানের আরও অবমূল্যায়ন হতে পারে। তখন এই দুর্বল ইউয়ান অন্যান্য দেশের তুলনায় চীনা পণ্যকে সস্তা করে তুলবে।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের বিষয়টি দেখে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন যে তারা ইতোমধ্যে বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের বেশিরভাগ অংশ নিশ্চিহ্ন করতে সক্ষম।
এছাড়া বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে কীভাবে আলোচনা শুরু হতে পারে তার কোনো ইঙ্গিতও এখনো পাওয়া যাচ্ছে না।
চীন এরইমধ্যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ দায়ের করেছে, যেখানে ট্রাম্পকে ‘গুন্ডামি’ কৌশলে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।

(ওয়াশিংটনের) ৫০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি একটি ভুলের ওপরে আরেকটি ভুল, যা মার্কিন পদক্ষেপের একতরফা ধমকানোর প্রকৃতিকে তুলে ধরেছে , বুধবার দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে ।’

এর আগে গত চৌঠা এপ্রিল চীন ডব্লিউটিএ’র কাছে একটি আবেদন করেছিল যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কের বিষয়টি নিয়ে আলাপের কথা বলা হয়েছিল।

‘বেইজিং ডব্লিউটিওর নিয়ম অনুযায়ী তার বৈধ অধিকার এবং স্বার্থকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করবে এবং বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থা এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য ব্যবস্থাকে দৃঢ়ভাবে বজায় রাখবে বলে তাদের একজন মুখপাত্র বলেছেন ।’

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

এবার কমছে বাজেটের আকার

সাধারণত চলমান অর্থবছরের তুলনায় পরবর্তী অর্থবছরে কিছুটা হলেও ব্যয় বাড়িয়ে বাজেট দেওয়া হয়। সরকার আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের ক্ষেত্রে সেই প্রবণতা ভাঙতে যাচ্ছে।...

তারকাদের নববর্ষ উদযাপন

আজ পহেলা বৈশাখ। বাঙালির উৎসব, আনন্দ, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্যের  দিন আজ।  রাজধানীজুড়ে নানা আয়োজন করা হয়েছে বাংলা সনকে বরণ করার জন্য। ভোরের সূর্যোদয়ের সঙ্গে...

Related Articles

রানি এলিজাবেথ কেন এড়িয়ে চলতেন ইসরায়েলিদের

  ব্রিটেনের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ কখনোই ইসরায়েলকে পছন্দ করতেন না—এমনটাই দাবি...

গাজায় এক মাসে ৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত

  ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গত এক মাসে ইসরায়েলি হামলায় নতুন করে প্রায়...

গাজা পরিদর্শন শেষে যে হুমকি দিলেন নেতানিয়াহু

প্রায় ১৮ মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলছে ইসরায়েলি আগ্রাসন। এর জেরে বিশ্বজুড়ে...

ট্রাম্প প্রশাসন সব কিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে: বাইডেন

শুল্ক আরোপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি...