দেশবরেণ্য লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই। কিডনি জটিলতায় দীর্ঘ লড়াই শেষে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭১ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় তার মরদেহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে অগণিত ভক্ত–শ্রোতার ঢল নামে সেখানে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জোহরের নামাজের পর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর বাদ জোহর লাশবাহী গাড়িতে ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ার পথে রওনা দেন এই কিংবদন্তি শিল্পী। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ফরিদা পারভীনের ইচ্ছা অনুযায়ী কুষ্টিয়া পৌর কবরস্থানে বাবা–মায়ের পাশে তাকে শায়িত করা হবে। কুষ্টিয়ায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে সেখানে সমাহিত করা হবে।
ফরিদা পারভীন গত ৫ জুলাই গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলেও ২ সেপ্টেম্বর ফের অসুস্থ হয়ে ভর্তি হন এবং অবস্থার অবনতি হলে ১০ সেপ্টেম্বর লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে সংগীতে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় লালনসংগীত চর্চা ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৭ সালে একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ২০০৮ সালে জাপান সরকারের ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা অর্জন করেন। বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে লালনসংগীতের অনন্য এক পরিবেশক হিসেবে ফরিদা পারভীনের নাম চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
Leave a comment