চট্টগ্রাম নগরীর রাজাখালী এলাকায় একটি ঝুটের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজাখালী খালের বেড়িবাঁধসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত গুদামটিতে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা গেছে, আগুন লাগার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিকটবর্তী স্টেশন থেকে ইউনিটগুলো দ্রুত ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। প্রাথমিকভাবে চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করলেও পরিস্থিতির ওপর নজর রেখে অতিরিক্ত ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজন হলে আরও ইউনিট যুক্ত করা হবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের একজন অপারেটর জানান, রাজাখালী এলাকায় একটি ঝুটের গুদামে আগুন লাগার সংবাদ পাওয়া গেছে। দাহ্য বস্তু থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। সে কারণে একাধিক ইউনিট একযোগে কাজ করছে, যাতে আগুন আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে না পড়ে।
ঝুটের গুদামগুলোতে সাধারণত বিপুল পরিমাণ দাহ্য বর্জ্য ও কাপড়জাত সামগ্রী মজুত থাকে, যা আগুন লাগলে দ্রুত বিস্তার লাভ করে। সংশ্লিষ্টরা জানান, আগুনের তীব্রতা তুলনামূলক বেশি হওয়ায় নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সর্বোচ্চ সতর্কতা ও দক্ষতার সঙ্গে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে আগুন লাগার পর স্থানীয় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের বাসিন্দারা নিরাপদ দূরত্বে সরে যান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলের আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করেন। যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়, যাতে উদ্ধার ও অগ্নিনির্বাপণ কাজে কোনো বিঘ্ন না ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ১০টার কিছু পর হঠাৎ গুদামের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং কালো ধোঁয়ায় পুরো এলাকা ঢেকে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা প্রথমে নিজেরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকায় দ্রুত ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানান, ঝুটের গুদামে আগুন লাগার ঘটনায় সাধারণত আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ করতে তুলনামূলক বেশি সময় লাগে। কারণ, ঝুট ও কাপড়জাত বর্জ্য দীর্ঘক্ষণ জ্বলতে থাকে এবং ভেতরে আগুন লুকিয়ে থাকতে পারে। সে কারণে আগুন নেভানোর পাশাপাশি ‘ওভারহোলিং’ কার্যক্রমও গুরুত্বপূর্ণ, যাতে পুনরায় আগুন জ্বলে ওঠার ঝুঁকি না থাকে।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসার পর তদন্ত করে আগুন লাগার উৎস এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট, অসতর্কতা বা অন্য কোনো কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
Leave a comment