দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ঘোড়া জবাই ও মাংস সরবরাহের অভিযোগে গাজীপুর মহানগরীর হায়দ্রাবাদ রথখলা এলাকায় সোমবার (৪ নভেম্বর) একটি কারখানায় অভিযান চালিয়েছে র্যাব-১, জেলা প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। অভিযানে জবাইকৃত ঘোড়ার মাংস জব্দ ও ৩৭টি জীবিত ঘোড়া উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন গাজীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ। তিনি জানান, অভিযানের খবর পেয়ে জবাই চক্রের সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়, ফলে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে—মাংস বিক্রির উদ্দেশ্যে ঘোড়াগুলো এখানে এনে জবাই করা হচ্ছিল। উদ্ধারকৃত জীবিত ঘোড়া ও জব্দকৃত মাংস আপাতত স্থানীয় একজনের জিম্মায় রাখা হয়েছে। বুধবার সকালে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে সেগুলো হস্তান্তর করা হবে।”
গাজীপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের সার্জন হারুন-রোমান জানান, উদ্ধার হওয়া ঘোড়াগুলোর অধিকাংশই অসুস্থ এবং অপুষ্টিতে ভুগছে। প্রাথমিক পরীক্ষায় মাংসে বিষাক্ত টক্সিন পাওয়া গেছে, যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
তিনি আরও বলেন, “এই মাংস কোনোভাবেই খাদ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। ঘোড়ার মাংসে এমন কিছু বিষাক্ত উপাদান শনাক্ত হয়েছে যা দীর্ঘমেয়াদে লিভার, কিডনি ও স্নায়ুতন্ত্রে ক্ষতি করতে পারে। তাই কেউ যেন এই মাংস ক্রয় বা গ্রহণ না করেন, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করছি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় রাতের অন্ধকারে গোপনে ঘোড়া জবাই করা হতো এবং বিভিন্ন বাজারে গরু বা মহিষের মাংস হিসেবে বিক্রি করা হতো। তবে সম্প্রতি স্থানীয়দের সন্দেহের ভিত্তিতে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ আসলে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
র্যাব-১ এর কর্মকর্তারা জানান, এই ঘোড়া জবাই চক্রের সঙ্গে গাজীপুর ও আশপাশের জেলায় কার্যরত একটি বৃহত্তর সিন্ডিকেট জড়িত থাকতে পারে। উদ্ধার হওয়া ঘোড়াগুলোর মালিকানা ও মাংসের সরবরাহ চেইন শনাক্তে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় গাজীপুর সদর থানায় প্রাণিসম্পদ সংরক্ষণ ও ভেজালবিরোধী আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। স্থানীয় প্রশাসন বলেছে, অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
Leave a comment