Home আন্তর্জাতিক গাজা সিটিতে অবিস্ফোরিত বোমা—ধ্বংসস্তূপে মৃত্যুফাঁদ
আন্তর্জাতিক

গাজা সিটিতে অবিস্ফোরিত বোমা—ধ্বংসস্তূপে মৃত্যুফাঁদ

Share
Share

গাজা শহরের ধ্বংসস্তূপ এখন শুধুই ধ্বংসাবশেষ নয়—সেখানে ছড়িয়ে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অবিস্ফোরিত বোমা, যা এলাকায় আটকা পড়া মানুষের জীবন ও উদ্ধারকাজকে মারাত্মকভাবে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।

পাশাপাশি ইসরায়েলের চলমান অবরোধ ও সীমিত প্রবেশপথের কারণে ভারী যন্ত্রপাতি ও নির্মাণসামগ্রী না পৌঁছায় পুনর্গঠন ও জীবনরক্ষাকারী কাজ কার্যত স্থবির হয়ে গেছে, এ বিষয়টি একাধিক স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সূত্রে জানানো হয়েছে।

গাজা সিটি মেয়র ইয়াহিয়া আল-সররাজ আল জাজিরাকে বলেন, ধ্বংসস্তূপ সরানো ও জলসংযোগ পুনঃস্থাপনে কমপক্ষে ২৫০টি ভারী যন্ত্রপাতি ও প্রায় এক হাজার টন সিমেন্ট জরুরি। কিন্তু অবরুদ্ধ সীমান্ত ও চালান সীমাবদ্ধতার কারণে প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও যন্ত্রপাতি গাজায় পৌঁছাতে পারছে না।

আল জাজিরার গাজার প্রতিবেদক হিন্দ খুদারি জানিয়েছেন, বড় চাহিদার বিপরীতে সাম্প্রতিক সময়ে মাত্র ছয়টি ট্রাকই সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকতে পেরেছে। খুদারি আরও বলেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও আনুমানিক হাজার হাজার মানুষ চাপা পড়ে রয়েছে—এ তালিকায় প্রাপ্ত সংখ্যা হিসেবে প্রায় ৯ হাজার মানুষকে উদ্ধারের প্রত্যাশা করা হচ্ছে—তারা বলছেন, উদ্ধার কাজে ব্যবহার করা নতুন যন্ত্রপাতিগুলো আপাতত ইসরায়েলি বন্দিদের মরদেহ উদ্ধারে ব্যবহার হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক বোমা অপসারণ সংস্থা হালো ট্রাস্টের মধ্যপ্রাচ্য পরিচালক নিকোলাস টরবেট বলেন, গাজার প্রায় প্রতিটি অংশে বিস্ফোরণবিধ্বস্ত গোলাবারুদ আছে—অনেকগুলোই আঘাতের পর বিস্ফোরিত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বিস্ফোরিত হয়নি। ফলে এগুলো অপসারণে সময় লাগছে এবং পুনর্গঠন প্রক্রিয়া ব্যাপকভাবে বিলম্বিত হচ্ছে। তাঁর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, অনেক ক্ষেত্রে নিরাপদভাবে বোমা অপসারণের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো নিয়ন্ত্রিত উপায়ে ছোট পরিমাণ বিস্ফোরক ব্যবহার করে বোমা ধ্বংস করা—এই কাজে জটিল নয় এমন সরঞ্জামই কার্যকর হবে।

ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানিয়েছে, গাজায় মোটামুটি ২ লাখ টন বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে তাদের রেকর্ডে আছে; এর মধ্যে প্রায় ৭০ হাজার টন এখনো বিস্ফোরিত হয়নি—এগুলি ধ্বংসস্তূপ ও সড়কপথ, পানি এবং লোকাল অবকাঠামোর নিকটবর্তী স্থানে লুকিয়ে আছে। এগুলো ছাড়া উদ্ধারকাজ ও পুনর্গঠন কঠিন।

মেয়র ইয়াহিয়া আল-সররাজের আশঙ্কা—জল সরবরাহ নেটওয়ার্ক সচল রাখতে এবং নতুন কূপ খননের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সিমেন্ট না থাকলে নগরের হাজার হাজার বাসিন্দা পানির অভাবে পড়বেন। পরিষ্কার জলের অভাব, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা মানুষদের দ্রুত উদ্ধার না হলে রোগব্যাধি ও প্রাণহানি বাড়বে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

রাস্তার পাশে ফেলে যাওয়া নবজাতক পেল নতুন পরিবার

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় রাস্তার পাশে কম্বলে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার হওয়া একদিন বয়সী নবজাতক কন্যাশিশুটি অবশেষে পেল নতুন ঠিকানা। আইনি প্রক্রিয়া, সামাজিক যাচাই-বাছাই এবং...

ফিলিস্তিনি পাসপোর্টধারী ও ৭ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

ফিলিস্তিনি পাসপোর্টধারী এবং সাতটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। জাতীয় ও জননিরাপত্তার ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্ত...

Related Articles

ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ মেঘনা–গোমতী সেতুর টোল আদায়ের কার্যাদেশে অনিয়ম, সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার...

ওসমান হাদির মৃত্যুতে কমনওয়েলথ মহাসচিবের শোক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন...

জোহানেসবার্গে বন্দুক হামলায় নিহত ৯

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের পশ্চিমাঞ্চল বেকার্সডাল টাউনশিপে রোববার (২১ ডিসেম্বর) ভোরে বন্দুকধারীর এক...

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত নোরা ফাতেহি

মুম্বাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন বলিউড সেনসেশন নোরা ফাতেহি। মার্কিন জনপ্রিয় ডিজে...