Home আন্তর্জাতিক গাজা পুনর্গঠনের আরব পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করল হোয়াইট হাউস
আন্তর্জাতিক

গাজা পুনর্গঠনের আরব পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করল হোয়াইট হাউস

Share
Share

গাজার পুনর্গঠনের জন্য আরব নেতাদের দেওয়া প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছে হোয়াইট হাউস। কায়রোতে অনুষ্ঠিত এক জরুরি আরব সম্মেলনে এই পরিকল্পনা অনুমোদন করা হলেও, যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে যে এটি গাজার বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র ব্রায়ান হিউজ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গাজা এখন সম্পূর্ণ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সেখানে ধ্বংসস্তূপ এবং অবিস্ফোরিত অস্ত্রে ভরা এলাকায় স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব নয়। বর্তমান প্রস্তাব গাজার প্রকৃত পরিস্থিতি বিবেচনায় নেয়নি।’ তিনি আরও জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজাকে হামাসমুক্ত রেখে পুনর্গঠনের পরিকল্পনায় অটল রয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে আলোচনায় প্রস্তুত।

আরব সম্মেলনের পুনর্গঠন পরিকল্পনা
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) কায়রোতে অনুষ্ঠিত এক জরুরি আরব সম্মেলনে মিশরের প্রস্তাবিত গাজা পুনর্গঠন পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়। এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হলো, ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত না করে তাদের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করা।
পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের জন্য মিশর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেছে, যার মধ্যে রয়েছে:
মানবিক সহায়তা পাঠানো: অবরুদ্ধ গাজায় জরুরি সহায়তা পাঠিয়ে সেখানকার জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা।
অবকাঠামো পুনর্গঠন: ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট, হাসপাতাল, স্কুল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পুনরায় নির্মাণ করা।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা গঠন: জাতিসংঘ ও আরব লিগের সমন্বয়ে একটি পর্যবেক্ষণ দল গঠন করা হবে, যারা পুনর্গঠন কার্যক্রম তদারকি করবে।
মিশরের পরিকল্পনায় পাঁচ বছরের মধ্যে গাজা পুনর্গঠনে ৫৩ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৬০,০০০ ক্ষতিগ্রস্ত ঘর পুনর্নির্মাণ এবং ধ্বংসস্তূপ অপসারণে ৩ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অধীনে ২০৩০ সালের মধ্যে গাজায় ৩০ লাখ মানুষের জন্য নতুন আবাসন প্রকল্প, বিমানবন্দর, বন্দর, শিল্প এলাকা, হোটেল এবং পার্ক নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ওয়াশিংটনের বিরোধিতা ও ট্রাম্পের বিতর্কিত পরিকল্পনা
হোয়াইট হাউসের এই প্রত্যাখ্যান এমন এক সময় এলো, যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ বানানোর পরিকল্পনার কথা বলেছেন। তিনি ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের কথা বললেও, অনেক আরব দেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিকল্পনাকে ‘জাতিগত নিধনের অংশ’ হিসেবে সমালোচনা করেছে।
মিশরের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা গাজায় ফিলিস্তিনিদের উপস্থিতি বজায় রেখেই পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। তবে হোয়াইট হাউসের সাম্প্রতিক বক্তব্য স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্র এখনো এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করছে না। এ অবস্থায়, গাজার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে আরব বিশ্ব ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

বাড়ি ফেরার আগেই কারাগারে মৃত্যু, অবশেষে দেশে গেল বিজলির লাশ

ভারতের নাগরিক বিজলি রায় (৪০) চার বছর আগে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে ছয় মাসের সাজা পান। তবে, পরিবারের খোঁজ না মেলায় তিনি...

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে জাতিসংঘের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস অঙ্গীকার করেছেন যে, রোহিঙ্গারা যেন আগামী বছর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ফিরে গিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সে...

Related Articles

পাকিস্তানে পৃথক বোমা হামলায় নিহত ১২

পাকিস্তানের সহিংসতাপ্রবণ বেলুচিস্তানে পৃথক দুটি বোমা হামলায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ফ্রন্টিয়ার কোরের পাঁচ...

যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর তাণ্ডবে ২০ জনের মৃত্যু

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ টর্নেডো ও তীব্র ঝড়ের আঘাতে অন্তত ২০...

ইয়েমেনে মার্কিন হামলায় নিহত ২৩

ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলায় এখন পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ...

ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াবহ হামলা: মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংঘাতের শঙ্কা

ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বড় পরিসরে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট...