ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় সম্ভাব্য শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিতে ২০ হাজার সেনাকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। তাদের প্রধান দায়িত্ব হিসেবে স্বাস্থ্যসেবা, পুনর্গঠন কার্যক্রম এবং মানবিক সহায়তা সমন্বয়ের কাজ নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাজাফ্রি সাজামসোয়েদ্দিন শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল মুসলিম দেশ এবং দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনের পাশে অবস্থান নিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে গাজায় স্থিতিশীলতা ফেরানোর উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র যে বহুজাতিক বাহিনীর ধারণা নিয়ে কাজ করছে, তার অংশ হিসেবে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গেও আলোচনায় রয়েছে ওয়াশিংটন। এই প্রস্তাবে আজারবাইজান, মিশর ও কাতারও অন্তর্ভুক্ত আছে বলে জানা গেছে।
গত সপ্তাহে রয়টার্সের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মার্কিন প্রশাসনের একটি খসড়া পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, সম্ভাব্য শান্তিরক্ষা
বাহিনী গাজা অঞ্চলকে সামরিকীকরণমুক্ত করা, সীমান্ত সুরক্ষা, বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ত্রাণসহায়তা বিতরণ এবং নতুন প্রশিক্ষিত ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীকে সমর্থন দেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবে।
তবে পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত হয়নি এবং কোন দেশ কতজন বাহিনী পাঠাবে সে বিষয়ে আলোচনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাজামসোয়েদ্দিন জানান, সেনা প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও তাদের কখন মোতায়েন করা হবে বা কী ম্যান্ডেট দেওয়া হবে—সে বিষয়ে সরকার এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।
তার ভাষায়, “আমরা সর্বোচ্চ ২০,০০০ সৈন্য প্রস্তুত রেখেছি। আপাতত তারা স্বাস্থ্যসেবা ও নির্মাণ-সংক্রান্ত কাজ করবে। সেনা মোতায়েনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট নেবেন।”
তিনি আরও জানান, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো এবং জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহ (যিনি বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ায় রাষ্ট্রীয় সফরে রয়েছেন) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তিরক্ষা বাহিনী গঠনের উদ্যোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন। এর আগে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট প্রাবোও ঘোষণা করেন যে, জাতিসংঘের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব এলে ইন্দোনেশিয়া ২০ হাজার বা তার বেশি সেনা পাঠাতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য একটি স্থায়ী শান্তির পরিবেশ তৈরি করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতা করতে ইন্দোনেশিয়া প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
Leave a comment