ক্ষমতার মোহে বিএনপি বেহুঁশ হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেছেন, বিএনপিকে এখনো হুঁশে ফেরার সময় আছে এবং সে সুযোগ কাজে লাগানো উচিত। শনিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে এক কনভেনশন সেন্টারে এনসিপি ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা আয়োজিত ‘মৌলিক সংস্কার ও আগামীর রাজনীতি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বিএনপির উদ্দেশে বলেন, ‘ক্ষমতার লোভে আপনারা বেহুঁশ হয়ে গিয়েছেন। এই বেহুঁশ অবস্থা থেকে হুঁশে ফিরে আসার জন্য আমরা এখনো আপনাদের সাবধান করছি।’ তিনি আরও বলেন, একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্রের সামনে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাই—এই ধরনের বক্তব্য আসলে হুমকি, যা দেশের নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক ধারাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এই ধরনের গুন্ডামি-মাস্তানি, থ্রেটের রাজনীতি তরুণ প্রজন্ম মেনে নেবে না।’
এনসিপি নেতা তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করেন যে, সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের কোনো বাস্তবতা থাকবে না। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সংস্কার হবে, বিচার হবে, তারপর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মানুষ অংশ নেবে। যাঁরা এটা বুঝতে পারছেন না, তাঁরা জনগণের কাছে যান—তাঁরা কী চান, তা বুঝুন।’
কর্মশালায় বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলম বলেন, পরিবর্তনের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অর্থনীতিবিদ জিয়া হাসান বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের ধারক–বাহক শক্তি হিসেবে এনসিপির প্রতি মানুষের প্রত্যাশা অনেক। এই প্রত্যাশা পূরণে সংগঠনের সব স্তরের নেতাকর্মীদের আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে আমরা নাকি নির্বাচন চাই না। বিষয়টি একেবারেই ভুল। আমরা বলছি, যদি অর্থবহ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হয়, তবে রাষ্ট্রের মৌলিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার প্রয়োজন। বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পিএসসি—সব কিছুতে মৌলিক সংস্কার ছাড়া মানুষের আস্থা ফিরবে না।’
লেখক ও মানবাধিকারকর্মী মুস্তাইন জহির বলেন, ‘বাংলাদেশ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর কখনোই প্রশাসন, পুলিশ ও বিচার বিভাগের এমন বিপর্যস্ত অবস্থা দেখেনি। আজ সামাজিক বিভাজন এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যেখান থেকে ভবিষ্যতের পথনকশা নির্ধারণ করতে হলে একসঙ্গে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই।’
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন বিডিজবস-এর সিইও ফাহিম মাশরুর, কাতারের নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হাসান মাহমুদ এবং ‘ট্রাক লাগবে’-এর প্রতিষ্ঠাতা এনায়েত রশিদসহ অনেকে। সবাই মিলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা ও একটি নতুন রাজনৈতিক ধারা গঠনের ওপর জোর দেন।
Leave a comment