বিশ্ব যখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (AI) এগিয়ে যাচ্ছে, তখন ভারত এখনও নিজস্ব ফাউন্ডেশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল তৈরি করতে পারেনি। চীনের DeepSeek কম খরচে জেনারেটিভ এআই উন্নয়নের মাধ্যমে প্রযুক্তি খাতে আলোড়ন তুলেছে, কিন্তু ভারত এখনও সেই পর্যায়ে পৌঁছায়নি।
সরকার অবশ্য দাবি করছে, ১০ মাসের মধ্যেই একটি দেশীয় মডেল আসতে পারে। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, স্টার্টআপ ও গবেষকদের অত্যাধুনিক চিপ সরবরাহ করা হচ্ছে।
ভারতীয় প্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনা নিয়ে মাইক্রোসফট, এনভিডিয়া ও ওপেনএআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠান আশাবাদী। ওপেনএআইয়ের সিইও স্যাম অল্টম্যান জানিয়েছেন, ভারত এআই বিপ্লবে নেতৃত্ব দিতে পারে।
কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, মূল সমস্যা হলো— বিনিয়োগের অভাব, গবেষণার দুর্বল অবকাঠামো ও সরকারি নীতির সীমাবদ্ধতা।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বহু আগেই এই খাতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে। ২০১০-২০২২ সালের মধ্যে বিশ্বের ৮০% এআই পেটেন্ট গেছে এই দুই দেশে, যেখানে ভারত পেয়েছে মাত্র ০.৫%। যুক্তরাষ্ট্রের Stargate প্রকল্পের বাজেট $৫০০ বিলিয়ন, চীনের লক্ষ্য $১৩৭ বিলিয়ন, অথচ ভারতের রাষ্ট্রীয় এআই মিশন মাত্র $১ বিলিয়ন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারত এখনই DeepSeek-এর মতো এআই মডেল তৈরি করতে পারবে না। তবে ওপেন সোর্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দ্রুত অগ্রগতি সম্ভব।
স্টার্টআপ ও সরকারি প্রকল্পগুলো যে পরিমাণ বিনিয়োগ পাচ্ছে, তা দিয়ে দ্রুত ভারী কাজ করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ প্রসান্ত রায়। ভারতের ১৫% এআই বিশেষজ্ঞ বিশ্বজুড়ে কাজ করছেন, কিন্তু তাদের বেশিরভাগই দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। কারণ, গবেষণার পর্যাপ্ত সুযোগ নেই, বিশ্ববিদ্যালয় ও কর্পোরেট গবেষণাগারগুলো থেকে বড় ধরনের উদ্ভাবন আসছে না। ভারতের UPI পেমেন্ট সিস্টেম সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতায় বিপ্লব এনেছে। এআই ক্ষেত্রেও একই ধরনের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারত এআই দৌড়ে সম্পূর্ণ পিছিয়ে পড়েনি, তবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে ব্যবধান কমাতে বিনিয়োগ, গবেষণা ও হার্ডওয়্যার উৎপাদনে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। নইলে এই প্রতিযোগিতায় নেতৃত্ব দেওয়া ভারতের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।
Leave a comment