কাতারের রাজধানী দোহায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক নেতাদের টার্গেট করে চালানো ইসরায়েলি হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে হামাসের পাঁচ সদস্য এবং কাতারের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়েছেন বলে সংগঠনটি জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেলে শহরের উত্তরাঞ্চলীয় কাটারা জেলায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তারা অন্তত আটটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। বিস্ফোরণের পর আবাসিক ভবনের ওপর ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়তে দেখা যায়।
হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের আলোচনাকারী দল গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির সর্বশেষ মার্কিন প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক করছিল। সেই সময় দোহার ওই আবাসিক ভবনে হামলা চালানো হয়। সংগঠনটি এ হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ এবং আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।
কাতার সরকারও ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছে, এই হামলা শুধু আঞ্চলিক শান্তি প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করছে না, বরং একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ, যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল। কাতার দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গাজায় যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের জন্য মধ্যস্থতা করে আসছে।
দোহা যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক অংশীদার, কারণ কাতারে অবস্থিত আল-উদেইদ বিমান ঘাঁটি মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক কার্যক্রমের মূল কেন্দ্র। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের এই হামলা শুধু হামাস নয়, বরং কাতারের সঙ্গে বৃহত্তর কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করতে পারে।
এ ঘটনায় মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন,
“আমি এ ঘটনায় কোনো রোমাঞ্চ অনুভব করছি না। পুরো পরিস্থিতিই উদ্বেগজনক। আমরা অবশ্যই জিম্মিদের মুক্তি চাই, তবে এভাবে নয়। আজকের হামলার পদ্ধতি সঠিক হয়নি।”
এই হামলার পর দোহা এবং পুরো উপসাগরীয় অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। কাতারের ভূমিকা বরাবরই যুদ্ধবিরতি আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে ইসরায়েলের সরাসরি হামলা মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া জটিল করে তুলতে পারে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের আশঙ্কা।
Leave a comment