বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ (রোববার) ইতালির রোম সফরে যাচ্ছেন। তিনি সেখানে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরাম-এর ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টে অংশ নেবেন।
প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রোমের উদ্দেশে যাত্রা করবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
সফরসূচি অনুযায়ী, অধ্যাপক ইউনূস ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের মূল অধিবেশনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন। সেখানে তিনি খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র্য নিরসন ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা ও উদ্যোগ তুলে ধরবেন।
এছাড়া, তিনি ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান ও বিশ্বনেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন। এসব বৈঠকে বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, কৃষি প্রযুক্তির অগ্রগতি ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অংশীদারত্ব নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
ধর্ম, মানবিকতা ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গঠনে তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কারণে ড. ইউনূসের এই সফর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে বলে কূটনৈতিক মহলে মনে করা হচ্ছে।
ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরাম জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) আয়োজিত একটি বার্ষিক আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বিশ্বব্যাপী নীতিনির্ধারক, গবেষক, উদ্যোক্তা, তরুণ উদ্ভাবক এবং উন্নয়ন সহযোগীরা একত্রিত হয়ে ভবিষ্যতের খাদ্য ব্যবস্থার রোডম্যাপ নির্ধারণে মতবিনিময় করেন।
এবারের ফোরামটি ১০ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত ইতালির রোমে FAO সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ বছরের মূল প্রতিপাদ্য—“Transforming Agrifood Systems for a Sustainable Future”—অর্থাৎ টেকসই ভবিষ্যতের জন্য কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তর।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সফর বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক তৎপরতায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। বিশেষ করে বৈশ্বিক খাদ্য সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দারিদ্র্য মোকাবিলায় বাংলাদেশের ইতিবাচক ভূমিকা তুলে ধরতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হতে পারে।
পররাষ্ট্র বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিশ্বজুড়ে যখন খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে নতুন করে আলোচনা চলছে, তখন ড. ইউনূসের মতো একজন নোবেল বিজয়ীর উপস্থিতি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে। প্রধান উপদেষ্টার সফরকালীন সময় জুড়ে তিনি একাধিক সাইড ইভেন্ট ও নেটওয়ার্কিং সেশনে অংশ নেবেন। সফর শেষে ১৫ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা রয়েছে তার।
বাংলাদেশ সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে, এই সফরের অভিজ্ঞতা ও আন্তর্জাতিক আলোচনার ফলাফল পরবর্তীতে দেশের খাদ্য নীতি ও কৃষি উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
Leave a comment