ইন্টারনেট-ভিত্তিক তথ্য বিপ্লবের এক যুগান্তকারী উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয় উইকিপিডিয়া। ২০০১ সালের ১৫ জানুয়ারি জিমি ওয়েলস ও ল্যারি স্যাঙ্গার-এর হাত ধরে যাত্রা শুরু করে এই মুক্ত বিশ্বকোষটি। তখন থেকেই বিশ্বজুড়ে জ্ঞানপ্রত্যাশীদের জন্য একটি উন্মুক্ত, বহুভাষিক এবং সম্পূর্ণ বিনামূল্যের তথ্যভান্ডার হিসেবে এটি নিজের স্থান করে নেয়।
উইকিপিডিয়া এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে যে কেউ ইচ্ছা করলেই নিবন্ধ সম্পাদনা করতে পারে। এই ‘উইকি’ নীতির ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত বিশ্বকোষটি সময়ের সাথে সাথে হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনসাইক্লোপিডিয়া। বর্তমানে এতে ৩০০টির বেশি ভাষায় কোটি কোটি নিবন্ধ রয়েছে, যার মধ্যে বাংলা উইকিপিডিয়াও উল্লেখযোগ্যভাবে সমৃদ্ধ হয়েছে।
প্রযুক্তিনির্ভর এই যুগে উইকিপিডিয়া কেবল ছাত্র-শিক্ষক কিংবা গবেষক নয়, বরং প্রতিদিনের সাধারণ ব্যবহারকারীর জন্যও হয়ে উঠেছে তথ্য খোঁজার নির্ভরযোগ্য জায়গা। যদিও বিভিন্ন সময় এর তথ্যের নির্ভুলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তবু স্বেচ্ছাসেবী সম্পাদকের কঠোর পর্যালোচনার মাধ্যমে তা যতটা সম্ভব বিশ্বাসযোগ্য রাখার চেষ্টা করা হয়।
উইকিপিডিয়ার সাফল্য শুধু তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—এটি বিশ্বজুড়ে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের একটি প্রতীক হয়ে উঠেছে। “জ্ঞান সবার জন্য” এই দর্শনের মাধ্যমে উইকিপিডিয়া প্রমাণ করেছে, তথ্যকে গণতান্ত্রিকভাবে ছড়িয়ে দেওয়াও এক ধরনের শক্তিশালী সামাজিক পরিবর্তনের হাতিয়ার।
তথ্যপ্রযুক্তি ও জ্ঞানচর্চার এ দুনিয়ায় উইকিপিডিয়ার অবদান নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী, যা বিশ্বকে করেছে আরও সংযুক্ত, আরও সচেতন।
Leave a comment