ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে বিধ্বস্ত হওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটির ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকালে উড্ডয়নের মাত্র পাঁচ মিনিট পর সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছুটে যাওয়া এই বিমানটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। বিধ্বস্ত বিমানের ব্ল্যাকবক্সটি পাওয়া গেছে এক মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের ছাদে, যেখানেই মূলত উড়োজাহাজটি গিয়ে ধাক্কা খায়।
দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (এএআইবি) ও গুজরাট সরকারের যৌথভাবে গঠিত একটি ৪০ সদস্যের বিশেষ টিম ব্ল্যাকবক্সটি উদ্ধার করে। ব্ল্যাকবক্স বা ডিজিটাল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (ডিএফডিআর) এমন এক যন্ত্র, যা বিমানের গতি, উচ্চতা, ইঞ্জিনের কার্যকারিতা, ককপিটে থাকা পাইলটদের কথোপকথন এবং নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যোগাযোগসহ সমস্ত তথ্য রেকর্ড করে রাখে। এটি টাইটেনিয়াম ও স্টিলের মতো উচ্চ টেকসই ধাতু দিয়ে তৈরি, যাতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পরও তথ্য নিরাপদ থাকে।
ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে আসা বিশেষ তদন্তকারী দল। টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখর জানিয়েছেন, ‘প্রশিক্ষিত তদন্তকারীরা আমাদের বোঝাতে সাহায্য করবেন, কীভাবে একটি সাধারণ ফ্লাইট এমন মারাত্মক দুর্ঘটনায় রূপ নিল।’
উড়োজাহাজটিতে যাত্রী ও ক্রু মিলিয়ে মোট ২৪২ জন আরোহী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একমাত্র বেঁচে আছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক বিষ্ণু কুমার রমেশ। বাকিদের সবাই ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন, যার ফলে এটি ভারতের ইতিহাসে অন্যতম প্রাণঘাতী উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
বিমানবন্দরের একটি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, উড্ডয়নের সময় সবকিছু স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল। রানওয়ে দিয়ে গতি নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উড়তে শুরু করে বিমানটি। তবে উড়ার কিছুক্ষণ পরই এর উচ্চতা বাড়ছিল না, বরং সমান্তরালভাবে কিছুক্ষণ চলার পর এটি হঠাৎ নিচের দিকে নেমে আসতে থাকে। এরপরই বিমানটি ধাক্কা খায় একটি মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের ছাদে, যেখানে চিকিৎসকদের হোস্টেল অবস্থিত ছিল।
এখন এই ব্ল্যাকবক্স বিশ্লেষণের মাধ্যমে আশা করা হচ্ছে, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করা সম্ভব হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।
Leave a comment