যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভয় পান না বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্ক “স্বাভাবিক, ব্যবসায়িক ও গঠনমূলক” এবং ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু এই তথ্য জানিয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, সাম্প্রতিক রুশ হামলায় ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তারা দৃঢ়ভাবে টিকে আছেন। সাক্ষাৎকারে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে গত অক্টোবরে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে বলেন,“বৈঠকটি ছিল স্বাভাবিক, ব্যবসায়িক ও গঠনমূলক। তিনি (ট্রাম্প) কিছু
ছুড়ে মারেননি, এটা আমি নিশ্চিত। আমরা ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ও রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতা দুর্বল করার কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছি।”
বিশ্বজুড়ে অনেকেই ট্রাম্পকে ভয় পায়— এমন মন্তব্যের জবাবে জেলেনস্কি দৃঢ়ভাবে বলেন,“বিশ্বের সবাই ট্রাম্পকে ভয় পায়, এটা সত্যি। কিন্তু আমি নই… আমরা আমেরিকার শত্রু নই, বন্ধু। তাহলে ভয় পাব কেন?”
জেলেনস্কি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল এবং দুই দেশের সম্পর্ক “বহু বছর বা শতাব্দীজুড়ে কৌশলগত অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।”
তিনি জানান, ব্রিটেনের রাজা চার্লস ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক উন্নয়নে “নীরবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা” রাখছেন। জেলেনস্কির ভাষায়,“ট্রাম্প রাজা চার্লসকে অত্যন্ত সম্মান করেন এবং তাকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি মনে করেন।”
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আরও নিশ্চিত করেছেন, তাদের দেশ যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র নির্মাতাদের কাছ থেকে ২৭টি প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার পরিকল্পনা করছে। পাশাপাশি ইউরোপীয় মিত্রদের নিজস্ব প্যাট্রিয়ট সিস্টেম সাময়িকভাবে ধার দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। পশ্চিমা সামরিক সহায়তা প্রসঙ্গে জেলেনস্কি বলেন,“যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো সহায়তাই যথেষ্ট নয়।”
রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অভিযোগ তুলে তিনি বলেন,“রাশিয়া ইউরোপের বিরুদ্ধে একটি হাইব্রিড যুদ্ধ চালাচ্ছে। এই যুদ্ধ চলাকালেই তারা অন্য কোনো ইউরোপীয় দেশে নতুন করে হামলা করতে পারে।”
সাম্প্রতিক রুশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পশ্চিম ইউক্রেনের দুটি পারমাণবিক কেন্দ্রসহ বিদ্যুৎ অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কোম্পানি সেন্টরএনারগো জানায়, এসব হামলার পর তাদের উৎপাদন কার্যত “শূন্যে নেমে এসেছে।”
Leave a comment