আজ (৩১ আগস্ট) প্রিন্সেস অব ওয়েলস ডায়না ফ্রান্সিস স্পেনসারের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৭ সালের এই দিনে ফ্রান্সের প্যারিসে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মাত্র ৩৬ বছর বয়সে তিনি জীবনত্যাগ করেন। রাজবধূ হিসেবে নয়, ব্যক্তি হিসেবে তার স্বভাব, আচরণ, হাসি, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, স্টাইল এবং সৌন্দর্য – সবকিছু মিলিয়ে তিনি ছিলেন এক বিশ্বতারকা ।
ডায়ানার জীবনকাহিনী ছিল আলোচিত ও চিত্রনাট্যময়। ১৯৮১ সালে প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে বিয়ের পর থেকেই তিনি ক্যামেরার মুখে ছিলেন। হোক সেটা সন্তানের জন্ম, চ্যারিটি কাজ বা সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগ— সবক্ষেত্রেই তিনি নিজস্ব ছাপ রেখেছেন। পোশাক ও হেয়ারস্টাইলের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন যুগান্তকারী। বিশেষ করে ‘ডায়ানা কাট’ হিসেবে পরিচিত তার ছোট ছাঁটের হেয়ারস্টাইল আজও তরুণীদের মধ্যে জনপ্রিয়।
ডায়ানা ছিলেন স্টাইল আইকন; পোশাকের দিক থেকেও তাঁকে অনুকরণ করেন আধুনিক কেট মিডলটনসহ আরও অনেকে। তার রাজকীয় জীবনেও ছিল ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব। ১৯৯৬ সালে প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করতেন।
দুর্ঘটনার দিন বন্ধু দোদি আল ফায়েদকে সঙ্গে নিয়ে তিনি প্যারিসের পন্ত দ্য ল্য-অ্যালমা টানেলে যান। সেই দুর্ঘটনায় তাদের জীবন শেষ হয়, যা গোটা বিশ্বের মানুষকে স্তব্ধ করে দেয়। তাঁর মৃত্যু ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ইতিহাসে এক গভীর আঘাত এবং আন্তর্জাতিকভাবে কোটি কোটি মানুষ ‘জনগণের রাজকুমারী’ ডায়ানার মৃত্যুতে শোকাহত হয়।
মৃত্যুর পরও ডায়ানার প্রভাব অম্লান। তাঁর জীবনী ও ব্যক্তিত্ব নিয়ে তৈরি হয়েছে অসংখ্য বই, ডকুমেন্টারি এবং সিনেমা— যেমন ‘স্পেনসার’, ‘দ্য প্রিন্সেস’ ও নেটফ্লিক্সের ‘দ্য ক্রাউন’। লন্ডনের হাইড পার্কে তার স্মৃতিতে নির্মিত হয়েছে ‘ডায়ানা ফোয়ারা’।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ডায়ানার জীবন ও মৃত্যু ব্রিটিশ রাজপরিবারের নতুন প্রজন্মকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে, যা প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেলের সংসারেও প্রতিফলিত হয়। আজও ডায়ানা মানুষের হৃদয়ে বেঁচে আছেন—অপূর্ব সুন্দরী, হাস্যোজ্জ্বল এবং সকলের প্রিয় প্রিন্সেস অব ওয়েলস হিসেবে।
Leave a comment