বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ (মঙ্গলবার)। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর দিনগত রাতে ফেসবুকে ভারতবিরোধী একটি স্ট্যাটাস দেওয়ার পর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) একদল নেতাকর্মীর নির্মম নির্যাতনে নিহত হন তিনি।
ওই রাতে শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে রাত ৩টার দিকে হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে সারা দেশে ব্যাপক ক্ষোভ ও আন্দোলনের সৃষ্টি হয়।
২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। পরের বছর ১৫ সেপ্টেম্বর মামলায় অভিযোগ গঠন হয়। ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন—২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে চারজন এখনো পলাতক—মোর্শেদ-উজ-জামান, এহতেশামুল রাব্বি, মুজতবা রাফিদ এবং মুনতাসির আল (জেমি)। শেষোক্তজন ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট গাজীপুরের হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে যান।
গত ১৬ মার্চ মামলার ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখে।
এদিকে শহীদ আবরার ফাহাদের স্মৃতিকে জাতীয়ভাবে সম্মান জানাতে অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি —৭ অক্টোবরকে “আবরার ফাহাদ দিবস” এবং ২৫ ফেব্রুয়ারিকে “বিডিআর ম্যাসাকার দিবস” হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে জানানো হয়, শহীদ আবরারের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকাসহ দেশের সব শিল্পকলা একাডেমিতে প্রদর্শিত হবে প্রামাণ্যচিত্র ‘ইউ ফেইলড টু কিল আবরার ফাহাদ’। ঢাকায় আয়োজিত প্রদর্শনীতে উপস্থিত থাকবেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ।
এছাড়া মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাশী চত্বরে আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণসভা ও ‘আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠান। উদ্বোধন করবেন শহীদ আবরারের বাবা।
আবরার ফাহাদ, এক তরুণ ছাত্র, যিনি নিজের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন—তার মৃত্যু আজও জাতির বিবেককে নাড়া দেয়।
Leave a comment