ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারার নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ কার্যক্রমে অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে। শুরু হওয়ার মাত্র ১৪ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি ২৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া একাধিক পোস্টে তিনি এই তথ্য প্রকাশ করেন এবং সহযোগীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তাসনিম জারা লেখেন, “মাত্র ১৪ ঘণ্টায় আপনারা ২৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ডোনেট করেছেন, যা আমাদের ফান্ডরেইজিং লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও বেশি। আপনাদের অকল্পনীয় সাড়া ও ভালোবাসায় আমরা সত্যিই অভিভূত।” তিনি জানান, তার নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের মোট লক্ষ্যমাত্রা ৪৬ লাখ ৯৩ হাজার ৫৮০ টাকা। এই লক্ষ্য পূরণ হলেই অনুদান সংগ্রহ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এর আগে আরেকটি পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, মাত্র সাত ঘণ্টার মধ্যেই ১২ লাখ টাকার বেশি অনুদান জমা পড়েছিল। সে সময় তিনি লিখেছিলেন, “এতটা অভূতপূর্বভাবে আপনারা পাশে দাঁড়াবেন, তা আমাদের কল্পনার বাইরে ছিল।” তার এই মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট হয়, অনলাইনভিত্তিক এই ফান্ডরেইজিং কার্যক্রম প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত এগোচ্ছে।
তাসনিম জারা তার পোস্টে অনুদান সংগ্রহের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শুরু থেকেই তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে এই ফান্ডরেইজিং কার্যক্রম হবে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তাও বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন তিনি।
তার ভাষায়, প্রথমত, কোনো ধরনের নগদ অর্থ গ্রহণ করা হচ্ছে না। সব অনুদান বিকাশ ও ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে, যাতে প্রতিটি লেনদেনের একটি আনুষ্ঠানিক রেকর্ড থাকে। এই রেকর্ড কোনো ব্যক্তিগত টিম দ্বারা নয়, বরং বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে সংরক্ষিত থাকবে, যা ভবিষ্যতে যাচাইযোগ্য হবে।
দ্বিতীয়ত, নিয়মিতভাবে অনুদানের মোট পরিমাণ এবং কোন মাধ্যমে কত টাকা এসেছে, সে সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করা হচ্ছে। তৃতীয়ত, সংগৃহীত অর্থ কোন খাতে ব্যয় করা হবে, তার বিস্তারিত বিবরণও প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি। এসব তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছেও জমা দেওয়া হবে, যাতে প্রয়োজনে কমিশন তা যাচাই করতে পারে।
ফান্ডরেইজিং কার্যক্রম চলাকালে একটি কারিগরি সমস্যার কথাও জানান তাসনিম জারা। তিনি বলেন, বিকাশ অ্যাকাউন্টের দৈনিক লিমিট শেষ হয়ে যাওয়ায় রাত ২টার পর আর বিকাশের মাধ্যমে অনুদান গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে যারা বিকাশে অনুদান পাঠাতে পারছেন না, তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অনুদান পাঠানোর অনুরোধ জানান তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এ ধরনের স্বচ্ছ ও অনলাইনভিত্তিক ফান্ডরেইজিং এখনো তুলনামূলকভাবে নতুন ধারণা। সাধারণত বড় দলগুলোর নির্বাচনী ব্যয় নিয়ে নানা প্রশ্ন ও অভিযোগ উঠে। সে প্রেক্ষাপটে তাসনিম জারার উদ্যোগ একটি ভিন্ন বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করছেন তারা। বিশেষ করে তরুণ ভোটার ও শহুরে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ উদ্যোগ ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে।
Leave a comment