গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে একটি ভাড়াবাড়ির ১০টি ঘর সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ভোরের এই ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণহানি না হলেও ভাড়াটিয়াদের ঘরে থাকা আসবাবপত্র, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র আগুনে পুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হঠাৎ এই দুর্ঘটনায় সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোর আনুমানিক ৬টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার জৈনাবাজার এলাকার আবদার কলেজ রোডে অবস্থিত রফিকুল ইসলাম রবি নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন ভাড়াবাড়িতে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে একটি তালাবদ্ধ ঘর থেকে ধোঁয়া ও আগুনের লেলিহান শিখা উঠতে দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন পাশের ঘরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে এবং অল্প সময়ের মধ্যে পুরো ভাড়াবাড়ির ১০টি ঘর আগুনের কবলে পড়ে।
ভাড়াটিয়ারা জানান, ভোরের দিকে অধিকাংশ মানুষ ঘুমন্ত অবস্থায় থাকায় আগুন লাগার বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে টের পাননি। হঠাৎ চিৎকার ও ধোঁয়ার গন্ধে ঘুম ভেঙে গেলে তারা বাইরে বেরিয়ে আগুন দেখতে পান। অনেকে প্রাণ বাঁচাতে খালি হাতে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। ফলে ঘরের ভেতরে থাকা কাপড়চোপড়, আসবাব, কাগজপত্র, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার কিছুই রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
এক ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়া বলেন, “সব কিছু চোখের সামনে পুড়ে গেল। ঘরের ভেতরে রাখা টাকা-পয়সা, গহনা—সব শেষ। এখন পরিবার নিয়ে কোথায় যাব, কীভাবে চলব, কিছুই বুঝতে পারছি না।” আরেকজন জানান, আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল যে কোনো কিছু বের করে আনার সুযোগই পাওয়া যায়নি।
খবর পেয়ে মাওনা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রায় ৩০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। মাওনা ফায়ার সার্ভিসের ইন্সপেক্টর নূরুল করিম বলেন, “সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। আগুন তীব্র হলেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় বড় ধরনের বিস্তার ও প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আগুনের সুনির্দিষ্ট কারণ নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও তাৎক্ষণিকভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তদন্ত সাপেক্ষে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব জানা যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
Leave a comment