অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সমুদ্র সৈকতে ইহুদিদের ধর্মীয় উৎসব হনুক্কা উদযাপন চলাকালে, সংঘটিত ভয়াবহ বন্দুক হামলায় জড়িত দুই হামলাকারীর একজন ভারতীয় নাগরিক বলে নিশ্চিত করেছে ভারতীয় পুলিশ। নিহত ওই হামলাকারীর নাম সাজিদ আকরাম (৫০)। তিনি ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা হলেও দীর্ঘদিন ধরে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছিলেন।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সিডনির জনপ্রিয় বন্ডাই সৈকতে হনুক্কা উদযাপন চলাকালে দুই বন্দুকধারী হামলা চালায়। এতে অন্তত ১৫ জন নিহত হন। অস্ট্রেলিয়ান পুলিশের তথ্যমতে, হামলাকারী দুজন বাবা ও ছেলে।
হামলার সময় পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে সাজিদ আকরাম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তার ছেলে নাভিদ আকরাম (২৪), যিনি হামলায় তার সঙ্গে ছিলেন বলে কর্তৃপক্ষের দাবি, তিনি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জীবিত উদ্ধার হন এবং বর্তমানে পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তেলেঙ্গানা পুলিশের মহাপরিচালক জানান, সাজিদ আকরাম ১৯৯৮ সালের নভেম্বরে ছাত্র ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় যান। তার আগে তিনি হায়দ্রাবাদে বাণিজ্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে চাকরির সন্ধানে অস্ট্রেলিয়ায় থেকে যান এবং প্রায় ২৭ বছর সেখানে বসবাস করেন। দীর্ঘদিন বিদেশে থাকলেও তার কাছে এখনও ভারতীয় পাসপোর্ট রয়েছে। তবে তার সন্তানরা—এক ছেলে ও এক মেয়ে—অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছে এবং তারা অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক।
তেলেঙ্গানা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আকরামের কথিত উগ্রবাদী মনোভাব বা ‘মৌলবাদের’ সঙ্গে ভারতের কোনো কার্যকরী বা আদর্শিক সংযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকালে ভারতে পরিবারের সঙ্গে খুব সীমিত যোগাযোগ রাখতেন।
পুলিশ জানায়, পারিবারিক বিরোধের কারণে কয়েক বছর আগে হায়দ্রাবাদে থাকা যৌথ পরিবারের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। এমনকি ২০১৭ সালে তার বাবার মৃত্যুর সময়ও তিনি জানাজায় অংশ নেননি। সর্বশেষ তিনি ২০২২ সালে ভারতে এসেছিলেন।
অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশ কমিশনার ক্রিসি ব্যারেট মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন,“এই হামলাটি ইসলামিক স্টেট (আইএস) দ্বারা অনুপ্রাণিত একটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রতীয়মান হয়েছে।”
অস্ট্রেলিয়ান নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ঘটনার পেছনে কোনো আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক বা সহায়তা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে।
অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসের সময় সাজিদ আকরাম ভেনেরা গ্রোসো নামে ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত এক নারীকে বিয়ে করেন। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে অস্ট্রেলিয়াতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করছিল।
সূত্র: এনডিটিভি
Leave a comment