মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে আয়োজিত বিশেষ ‘এয়ার শো’ দেখতে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই মানুষের ঢল নেমেছে। উৎসবমুখর পরিবেশে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে পুরোনো বিমানবন্দর এলাকা পরিণত হয়েছে এক বিশাল জনসমাগমে। সকাল পৌনে ১০টার দিকে বিমানবন্দরের প্রধান ফটকে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ সারি চোখে পড়ে।
আগারগাঁও-সংলগ্ন তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দরের ফটকজুড়ে নারী-পুরুষ, শিশু ও তরুণদের ভিড়। সবাইকে পর্যায়ক্রমে কঠোর নিরাপত্তা তল্লাশির মাধ্যমে ভেতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা যৌথভাবে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রবেশপথ ও আশপাশের এলাকায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ সতর্কতা।
ইতিমধ্যে হাজারো মানুষ বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশ করে নির্ধারিত স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। অনেক দর্শনার্থীর হাতে দেখা গেছে জাতীয় পতাকা। কেউ কেউ কপালে বেঁধেছেন লাল-সবুজ রঙের ফিতা, যেখানে লেখা ‘বিজয় দিবস’। আবার অনেকে বিজয় দিবসের বার্তা সংবলিত পোশাক কিংবা লাল-সবুজের রঙে সাজানো জামা পরে অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। পুরো এলাকা জুড়ে ছিল উৎসব, দেশপ্রেম ও উচ্ছ্বাসের আবহ।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক সরকারি তথ্যবিবরণীতে জানানো হয়, বিজয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দরে এয়ার শো অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিভিন্ন ধরনের বিমান ও আকাশযানের কসরত প্রদর্শনের কথা রয়েছে। তথ্যবিবরণীতে আরও উল্লেখ করা হয়, এই এয়ার শো সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে, যাতে সাধারণ মানুষ সরাসরি এসে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারেন।
তবে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এয়ার শো আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়নি। তবুও দর্শনার্থীদের আগ্রহে কোনো ভাটা ছিল না। অনেকে সকাল থেকেই এসে অপেক্ষা করছেন কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তের জন্য। দর্শকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছেন এই ব্যতিক্রমী আয়োজন উপভোগ করতে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসমাগম বিবেচনায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রবেশপথে মেটাল ডিটেক্টর, ব্যাগ তল্লাশি এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে জরুরি চিকিৎসা সহায়তার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে মেডিকেল টিম।
এদিকে, এয়ার শোকে কেন্দ্র করে তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় ড্রোন না ওড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সব মিলিয়ে, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দরে আয়োজিত এয়ার শো রাজধানীবাসীর জন্য এক ব্যতিক্রমী ও উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা হয়ে উঠেছে। আকাশে বিমানগুলোর কসরত শুরু হওয়ার অপেক্ষায় উদ্গ্রীব হয়ে রয়েছেন হাজারো দর্শনার্থী, যারা এই ঐতিহাসিক দিনে স্বাধীনতার গৌরবকে নতুনভাবে অনুভব করতে এসেছেন।
Leave a comment