Home আন্তর্জাতিক কম্বোডিয়ার অভ্যন্তরে থাইল্যান্ডের বিমান হামলা, যুদ্ধবিরতি হুমকির মুখে
আন্তর্জাতিক

কম্বোডিয়ার অভ্যন্তরে থাইল্যান্ডের বিমান হামলা, যুদ্ধবিরতি হুমকির মুখে

Share
Share

থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সীমান্তে টানা উত্তেজনার পর কম্বোডিয়ার অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালিয়েছে থাই প্রতিরক্ষা বাহিনী। আজ সোমবার ভোরের দিকে এ হামলা পরিচালনা করা হয়েছে।

থাইল্যান্ডের আন্তঃবিভাগীয় জনসংযোগ দপ্তরের (আইএসপিআর) প্রধান মেজর জেনারেল উইনথাই সুভারি স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কম্বোডীয় বাহিনীর আর্টিলারি ও মর্টার সংরক্ষণাগারগুলো লক্ষ্য করে অভিযান চালানো হয়েছে। থাই বাহিনীর দাবি, এসব অস্ত্রই সীমান্ত এলাকায় থাই সেনা ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলায় ব্যবহার করা হচ্ছিল।

মেজর জেনারেল সুভারি আরও জানান, রোববার কম্বোডীয় সেনাদের গুলিতে একজন থাই সেনা নিহত এবং দু’জন আহত হন। তার প্রতিক্রিয়ায়ই সোমবার ভোরে বিমান হামলা চালানো হয়।

পৃথক বিবৃতিতে কম্বোডীয় সেনাবাহিনীর আইএসপিআর দাবি করেছে, সোমবার ভোর ৫টা ৪ মিনিটে তাদের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে থাই বিমান বাহিনী। তারা অভিযোগ করে বলেছে, “গত কয়েকদিন ধরে থাই বাহিনী সীমান্তে উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে; এ হামলাও তারই অংশ।”
তবে বিমান হামলায় ক্ষয়ক্ষতির কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য এখনো প্রকাশ করেনি কম্বোডিয়া।

সংঘাত শুরু হয় রোববার দুপুরে, যখন কম্বোডীয় সেনারা সি সা কেত প্রদেশের সীমান্তে গুলি ছোড়ে। এতে দুই থাই সেনা আহত হন। পরে পাল্টা জবাব দেয় থাই বাহিনী, যা প্রায় আধাঘণ্টা স্থায়ী হয়।

সংঘাত শান্ত হতেই , থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী চার প্রদেশ—বুরি রাম, সুরিন, সি সা কেত ও উবন রাতচাথানির হাজার হাজার মানুষকে সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয় । সিএনএন জানিয়েছে, সীমান্তবর্তী বসতিগুলোর প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষই আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেছে।

সংঘাতের কয়েক ঘণ্টা আগে জাতিসংঘে কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে থাইল্যান্ড। অভিযোগে বলা হয়, কম্বোডিয়া থাই ভুখণ্ডে গোপনে ব্যাপকভাবে ল্যান্ডমাইন পুঁতে রেখেছে, যা বিস্ফোরণে থাই ও চীনা নাগরিক আহত হয়েছেন। এ ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্তও দাবি করে ব্যাংকক। অভিযোগ জানানোর পরপরই সি সা কেত এলাকায় দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে সংঘাত শুরু হয়।

সীমান্ত নিয়ে বিবাদের জেরে দীর্ঘ ১৫ বছরের যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত জুলাই মাসে সংঘাতে জড়িয়েছিল থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া। সেই সংঘাতে ৩২ জন নিহত এবং কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন, বাস্তুচ্যুত হন দুই লাখ মানুষ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যস্থতায় জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়।
সোমবারের বিমান হামলার পর সেই যুদ্ধবিরতি কার্যত নতুন করে হুমকির মুখে পড়েছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন ।
সূত্র: সিএনএন

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

পাকিস্তানে পুলিশের গাড়িতে আইইডি বিস্ফোরণ, নিহত ৩

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খায়বার পাখতুনখোয়া প্রদেশে পুলিশের গাড়িকে লক্ষ্য করে শক্তিশালী আইইডি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দেরা ইসমাইল খান জেলার পানিয়ালা এলাকায়...

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালকে প্রত্যর্পণ করবে ভারত : প্রেস সচিব

জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ভারত, বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করবে বলে দাবি করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি...

Related Articles

লন্ডন যাচ্ছেন না খালেদা জিয়া

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য আপাতত লন্ডনে...

সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযানে ২ কোটি ৭৩ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য উদ্ধার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা জেলার সীমান্ত এলাকায় টানা এক সপ্তাহের বিশেষ অভিযানে প্রায়...

রাজনীতিতে পূর্ণসময় দিতে চান সাকিব

বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল তারকা সাকিব আল হাসান স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন—ক্রিকেট...

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকে ঘিরে কলকাতায় পাল্টা কর্মসূচি 

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে নবনির্মিত ‘বাবরি মসজিদ’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা...