আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা ঘোষণা করেছে। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তালিকা প্রকাশ করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবার তিনটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন—দিনাজপুর-৩, বগুড়া-৭ এবং ফেনী-১। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই তিন আসন থেকে প্রার্থী হিসেবে খালেদা জিয়ার নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এর আগে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব আসনে প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা অনুমোদন করা হয়। বৈঠকে দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ নির্বাচনী প্রস্তুতি, মাঠ পর্যায়ের জরিপ এবং প্রার্থীদের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সক্ষমতা মূল্যায়ন করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন,“দীর্ঘ ১৬ বছর পর আমরা গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথে ফিরে যাচ্ছি। আগামী ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেটিকে আমরা একটি সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে রূপ দিতে চাই। এ লক্ষ্যে আমরা প্রাথমিকভাবে ২৩৭টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করছি।”
তিনি আরও জানান, বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের অংশীদার দলগুলোর সঙ্গেও সমন্বয় করে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা নির্ধারণ করবে। “যেসব আসনে সহযোগী দলগুলো প্রার্থী ঘোষণা করবে, সেসব আসনে বিএনপি সমন্বয়ের ভিত্তিতে প্রার্থী প্রত্যাহার বা সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে,” বলেন মির্জা ফখরুল।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন,“আমরা মাঠ পর্যায়ে জরিপ চালিয়ে যাচ্ছি যাতে প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করা যায়। নির্বাচন শুধু অংশগ্রহণের জন্য নয়, জয়ের জন্য লড়াই করতে চাই আমরা।”
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খালেদা জিয়ার তিন আসন থেকে প্রার্থী হওয়া বিএনপির রাজনৈতিক কৌশলের অংশ। দীর্ঘদিন ধরে তিনি অসুস্থ ও রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকলেও, তার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা দলটির নেতৃত্বে ঐক্যের বার্তা দিচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আনিসুজ্জামান বলেন,“খালেদা জিয়া বিএনপির প্রতীকী নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি। তাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা মূলত দলের কর্মী-সমর্থকদের উজ্জীবিত করার কৌশল।”
প্রসঙ্গত, এর আগেও খালেদা জিয়া একাধিকবার তিনটি আসন থেকে জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি বগুড়া-৬, বগুড়া-৭ ও ফেনী-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়লাভ করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বগুড়া-৬ ও ফেনী-১ আসন থেকে পদত্যাগ করেন, এবং বগুড়া-৭ আসনটি রেখে দেন। সর্বশেষ, মির্জা ফখরুল বলেন,“আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের অংশগ্রহণে এই নির্বাচন একটি নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। খালেদা জিয়া শুধু আমাদের দলের নয়, গণতন্ত্রের প্রতীক।
                                                                        
                                                                        
                            
                            
                                
			            
			            
 
			        
 
			        
 
			        
 
			        
				            
				            
				            
Leave a comment