কেনিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের রিফট ভ্যালি অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনায় অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার (১ নভেম্বর) ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
টানা কয়েকদিনের ভারি বর্ষণের ফলে পাহাড়ি মাটি ধসে ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটের উপর ধ্বংসস্তূপ নেমে আসে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। এলগেয়ো-মারাকওয়েট কাউন্টির পুলিশ কমান্ডার পিটার মুলিঞ্জে বলেন,“আমরা এখন পর্যন্ত ১৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছি এবং ১৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করতে পেরেছি। নিখোঁজের সঠিক সংখ্যা এখনো নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।”
কেনিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিপচুম্বা মুরকোমেন জানান, চলমান উদ্ধার তৎপরতায় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার অংশ নিচ্ছে। দুর্গম ও বিপদজনক এলাকা হওয়ায় উদ্ধারকর্মীরা উদ্ধারকাজে বিশেষ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুরকোমেন বলেন , “আমরা যত দ্রুত সম্ভব নিখোঁজদের উদ্ধার করার চেষ্টা করছি। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দিচ্ছে। অনেক পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।
কেনিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে গত এক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢাল দুর্বল হয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেশটিতে আগের চেয়ে বেশি ও তীব্র বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যা ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।
কেনিয়ার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত আরও বৃষ্টি হতে পারে, ফলে নতুন করে ভূমিধস ও বন্যার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
গত কয়েক বছরে কেনিয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়েই চলেছে। গত বছর মধ্য কেনিয়ায় আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সম্প্রতি প্রতিবেশী উগান্ডার পূর্বাঞ্চলেও ভূমিধসে ১৩ জন নিহত হন। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলো এখন “জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাবের” মুখে পড়ছে, যেখানে মৌসুমি বৃষ্টি আগের চেয়ে দীর্ঘ ও ভারি হচ্ছে।
কেনিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জনগণকে পাহাড়ি ঢালে না যাওয়া এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে চিকিৎসা ও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে,“আমরা প্রতিটি নাগরিকের জীবন রক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Leave a comment