নোয়াখালীতে ওমরাহ হজ পালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আবুল কালাম আজাদ (৫৩) নামের এক স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় তার স্ত্রী, মা এবং ভাতিজাসহ আরও তিনজন আহত হয়েছেন। রবিবার (২৬ অক্টোবর) ভোররাতে সদর উপজেলার মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আবুল কালাম আজাদ নোয়াখালী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরদরবেশ গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। তিনি স্থানীয় উত্তর ওয়াপদা বাজারের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দিবাগত রাতে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরেন আবুল কালাম আজাদ। ওমরাহ হজ পালন শেষে তিনি স্ত্রী নাসিমা আক্তার, মা ও ভাতিজা লিমনসহ একটি মাইক্রোবাসে করে গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন।
ভোররাতে তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি সোনাপুর-চৌমুহনী আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। সংঘর্ষের তীব্রতায় মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই চালক পালিয়ে যায়। রাতের অন্ধকারে কেউ বুঝতে পারেনি। সকালে স্থানীয়রা ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন এবং আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।
স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহত চারজনকে নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, আবুল কালাম আজাদকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। অন্য তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন,“খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। দুর্ঘটনার পরপরই মাইক্রোবাসের চালক পালিয়ে গেছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত গতির কারণে চালক গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারান। ট্রাকটিও রাস্তার পাশে যথাযথভাবে পার্ক করা ছিল না। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দেশে প্রায় ৪ হাজার ৮০০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ রাতের বেলা সংঘটিত হয়েছে।
Leave a comment