বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্যমতে, প্রতি বছর কোটি কোটি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ এই রোগে প্রাণ হারান। তবে জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন করে এই ভয়ঙ্কর রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন অভ্যাস ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায় এবং কীভাবে সচেতন থাকা যায়।
১. ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার
ধূমপান শুধুমাত্র ফুসফুসের ক্যান্সারের কারণ নয়, এটি মুখ, গলা, কণ্ঠনালী, কিডনি ও মূত্রথলির ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ায়। তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষতিকর রাসায়নিক কোষের DNA ক্ষতিগ্রস্ত করে, যা ক্যান্সার সৃষ্টিতে সহায়ক। চুন, জর্দা বা গুল ব্যবহারের মাধ্যমেও মুখ ও গলার ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে।
২. অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন
নিয়মিত ও অতিরিক্ত মদ্যপান লিভার, স্তন, খাদ্যনালী ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। অ্যালকোহল কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায় এবং DNA ক্ষতিগ্রস্ত করে, যা ক্যান্সারের আশঙ্কা বাড়ায়।
৩. অসুস্থ খাদ্যাভ্যাস
ফাস্টফুড, প্রক্রিয়াজাত মাংস (যেমন: সসেজ, হটডগ), অতিরিক্ত চর্বি, লবণ ও চিনি শরীরে বিষক্রিয়া তৈরি করে, বিশেষত কোলন ও পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
৪. শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা
নিয়মিত ব্যায়ামের অভাবে শরীরে চর্বি জমে। এটি স্তন, কোলন ও জরায়ুর ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি বা হালকা ব্যায়াম স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।
৫. কেমিক্যাল ও বায়ুদূষণের সংস্পর্শ
শিল্পকারখানার ধোঁয়া, কীটনাশক, রং, প্লাস্টিক পোড়ানোর ধোঁয়া বা অ্যাসবেস্টস জাতীয় পদার্থ দীর্ঘমেয়াদে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। ফুসফুস, ত্বক এবং লিভারের ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৬. অতিরিক্ত রোদে থাকা
দীর্ঘ সময় সূর্যের তীব্র রশ্মির সংস্পর্শে থাকা, ত্বকে ক্ষতি করে। UV রশ্মি স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণ বৃদ্ধি করে। সানস্ক্রিন ব্যবহার ও উপযুক্ত পোশাক পরিধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৭. ঘুমের অনিয়ম
অপর্যাপ্ত বা অনিয়মিত ঘুম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করে। হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে স্তন ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। দিনে ৭–৮ ঘণ্টা গভীর ঘুম স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অংশ হওয়া উচিত।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে জীবনধারায় সচেতন হওয়া জরুরি। সচেতনতা ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে মূল হাতিয়ার।




Leave a comment