গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম দফায় রাজি হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। বুধবার (৮ অক্টোবর) নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প লিখেছেন, “শান্তি চুক্তির অর্থ হলো খুব শিগগিরই সব জিম্মি মুক্তি পাবে, ইসরায়েল গাজা থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করবে। এটি শক্তিশালী, টেকসই এবং চিরস্থায়ী শান্তির দিকে প্রথম পদক্ষেপ।”
এর আগে, তিনি জানান যে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে তিনি এই সপ্তাহের শেষে মিশর সফরে যেতে পারেন।
গত মাসে ট্রাম্প গাজা সংকট নিরসনে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। ইসরায়েল ও হামাস উভয় পক্ষই প্রস্তাবটিতে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (৬ অক্টোবর) মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। বুধবার ছিল আলোচনার তৃতীয় দিন।
আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি এবং তুরস্কের গোয়েন্দা প্রধান ইব্রাহিম কালিনসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী মধ্যস্থতাকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে বলেন, “মধ্যস্থতাকারীরা ঘোষণা করেছেন যে, গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের সব বিধান ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ইসরায়েল ও হামাস একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে। এর ফলে যুদ্ধের অবসান ঘটবে, জিম্মিরা মুক্তি পাবে, ফিলিস্তিনি বন্দীরা ঘরে ফিরবে এবং গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ তৈরি হবে।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায়। এতে ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। তাদের মধ্যে ৪৭ জন এখনও জিম্মি আছেন বলে ইসরায়েলের দাবি, তবে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
অন্যদিকে, পাল্টা হামলায় গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের টানা অভিযানে গত দুই বছরে সেখানে অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯ জন শিশু।
Leave a comment