অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল গণহত্যা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন (COI)। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে কমিশন জানায়, গাজার ওপর ইসরায়েলের অবরোধ, মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা, জোরপূর্বক স্থানচ্যুতি, শিশুদের চিকিৎসাকেন্দ্র ধ্বংস এবং নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ তারা পেয়েছে।
ইসরায়েলি নেতৃত্বকে অভিযুক্ত করা হলো-
তদন্ত কমিশনের প্রধান নাভি পিল্লাই বলেন, “গাজায় গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে এবং তা এখনো চলমান। এই নৃশংস অপরাধের দায়ভার ইসরায়েলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের ওপর বর্তায়। তারা দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিতভাবে একটি গণহত্যার ছক কষেছে, যার বর্তমান লক্ষ্য গাজার ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস করা।”
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও অন্যান্য নেতারা সরাসরি উসকানি দিয়েছেন এবং গণহত্যায় ভূমিকা রেখেছেন।
ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া-
ইসরায়েল এ প্রতিবেদন সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটি দাবি করেছে, তদন্ত কমিশন পক্ষপাতদুষ্ট এবং এর অবিলম্বে বিলুপ্তি হওয়া উচিত। ইসরায়েল পূর্বেও COI-এর কাজ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে।
সহিংসতার বর্তমান চিত্র-
জাতিসংঘ কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের দিনই গাজা সিটিতে ইসরায়েল স্থল হামলা শুরু করে। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি আক্রমণে প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং দেড় লাখের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। অবরোধ ও অব্যাহত হামলার কারণে গাজায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও ভেঙে পড়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও গুরুত্ব-
COI জাতিসংঘের একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন সংস্থা, এটি জাতিসংঘ সচিবালয়ের পক্ষে সরাসরি কোনো অবস্থান নেয় না। তবে এর প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক আদালত এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রতিবেদন ইসরায়েলি নেতাদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ভিত্তি হিসেবে কাজ করতে পারে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
Leave a comment