জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে একই সঙ্গে জয়ী হয়ে নজির গড়েছেন এক দম্পতি। শিবির-সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হাফেজ তারিকুল ইসলাম কার্যকরী সদস্য পদে এবং তার স্ত্রী নিগার সুলতানা সহ-সমাজসেবা ও মানবসেবা উন্নয়ন সম্পাদক (ছাত্রী) পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
তারিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের (সেশন ২০১৯–২০) মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি বর্তমানে জাবি শাখা শিবিরের সমাজসেবা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অন্যদিকে তার স্ত্রী নিগার সুলতানা ফার্মেসি বিভাগের ৫০তম ব্যাচের (সেশন ২০২০–২১) চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি কুরআন অ্যান্ড কালচারাল স্টাডি ক্লাবের কো-হেড হিসেবে দায়িত্বে আছেন।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে জাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের আবদুর রশিদ জিতু। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে নির্বাচিত হয়েছেন শিবির-সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের মাজহারুল ইসলাম।
প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, মোট ২৫টি পদে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ২০টি পদে জয় পেয়েছে শিবির-সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট। বাকি চারটি পদের মধ্যে দুটি গেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) এবং দুটি স্বতন্ত্র প্রার্থীর দখলে।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে শিবির-সমর্থিত প্যানেল থেকে একসঙ্গে জয়ী হয়ে আলোচনায় এসেছিলেন এক দম্পতি। জাকসু নির্বাচনে একই ধরনের পুনরাবৃত্তি আবারও ছাত্ররাজনীতিতে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হলো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মতে, দম্পতির একসঙ্গে জয়লাভ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে এক অভিনব দৃষ্টান্ত। এটি কেবল ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং সংগঠনভিত্তিক শক্তিশালী সমর্থন ও প্রভাবের প্রতিফলনও বটে।
জাকসু নির্বাচনের এই ফলাফল ছাত্ররাজনীতির ভারসাম্যে নতুন দৃষ্টান্ত যোগ করেছে। বিশেষ করে দম্পতির একসঙ্গে জয় বিষয়টি ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এখন মূল প্রত্যাশা—নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের আস্থা রক্ষা করে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন।
Leave a comment