মেহেরপুরের আনন্দবাস গ্রামের পারভীন খাতুনের জীবনে নেমে এসেছিল অসীম বেদনার দিন। ভারতের নদীয়ার হৃদয়পুর গ্রামে জন্ম নেওয়া এই নারী বিয়ের পর বাংলাদেশে আসেন প্রায় তিন দশক আগে। কাঁটাতারের বেড়া ও কাগজপত্র না থাকার কারণে এরপর আর মা–বাবার কাছে যাওয়া হয়নি তার। এক বছর ধরে অসুস্থ মায়ের খবর রাখলেও পাসপোর্ট–ভিসার জটিলতায় মায়ের কাছে পৌঁছাতে পারেননি। ৫ সেপ্টেম্বর খবর এল—মা আর নেই। ভেঙে পড়েন পারভীন।
পরদিন সকালে স্বামী বিজিবি ক্যাম্পে গিয়ে মানবিক আবেদন জানান। বিজিবি বিষয়টি বিএসএফকে অবহিত করলে উভয় বাহিনীর যৌথ উদ্যোগে সীমান্তের শূন্যরেখায় আয়োজন করা হয় শেষ দেখা। কাফনে মোড়ানো নিথর মায়ের দেহ যখন খাটিয়ায় আনা হলো, ছুটে গিয়ে বুকভাঙা কান্নায় ভেঙে পড়েন পারভীন। জীবিত মায়ের মুখ দেখা হয়নি, কিন্তু নো–ম্যানস ল্যান্ডে অন্তত শেষবারের মতো বিদায় জানাতে পেরেছেন তিনি।
পারভীন খাতুন বলেন, “বিজিবি আর বিএসএফ না থাকলে মায়ের মুখটাও দেখা হতো না। তবে দুঃখ থেকে গেল, জীবিত অবস্থায় কাছে যেতে পারলাম না।” সীমান্তের কড়াকড়ি আর অনাবশ্যক কাগজপত্রের বেড়াজালে আটকে থাকা জীবনের এ গল্প আজ মানবিকতার এক অনন্য সাক্ষ্য হয়ে রইল।
Leave a comment