ইসরায়েলের হাইফা শহরের একটি তেল শোধনাগারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শোধনাগারের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ইসরায়েলের উপকূলীয় বন্দরনগরী হাইফায় অবস্থিত একটি বৃহৎ তেল শোধনাগারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। স্থানীয় সময় রবিবার (১৭ আগস্ট) ভোররাতে চালানো এ হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইসরায়েল হায়োম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহত ব্যক্তিরা শোধনাগারের একটি অভ্যন্তরীণ কক্ষে আটকা পড়ে ধ্বংসস্তূপ ও আগুনের মধ্যে প্রাণ হারান। ঘটনাস্থলে দমকলকর্মীরা পৌঁছালেও ততক্ষণে অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
শোধনাগারটির পরিচালনাকারী বাজান গ্রুপ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হামলায় মূল অবকাঠামো এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে পুরো শোধনাগারের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ১৫০ থেকে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে ধারণা করা হচ্ছে। হামলার কারণে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে জ্বালানি সরবরাহে সাময়িক সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম ইরানকে এ হামলার জন্য দায়ী করলেও এখন পর্যন্ত তেহরান কোনো মন্তব্য করেনি কিংবা আনুষ্ঠানিকভাবে দায় স্বীকার করেনি। মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক মহলে এ নিয়ে জল্পনা চলছে।
এর আগে চলতি বছরের ১৬ জুন একই শোধনাগারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছিল। ওই হামলা ছিল ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের অংশ, যা শুরু হয় ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে। ইসরায়েল প্রথমে ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালালে, ইরান পাল্টা জবাবে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
সংঘাতে পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুক্ত হয় এবং ইরানের নাতাঞ্জ, ফোরদো ও ইসফাহানসহ বেশ কয়েকটি পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। প্রায় ১২ দিন ধরে চলা এ সংঘাত অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ২৪ জুন যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শেষ হয়।
নতুন এই হামলার পর বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, যুদ্ধবিরতির পরও মধ্যপ্রাচ্যে আবারও উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। বিশেষ করে ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বের পুনরুত্থান আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বৈশ্বিক জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য নতুন হুমকি তৈরি করছে।
Leave a comment