কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি প্রাইভেটকারের চাপায় মা ও শিশু কন্যার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গাড়িতে থাকা তিনজনও আহত হয়েছেন। শনিবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার মাধাইয়া ইউনিয়নের কুটুম্বপুর মহাসড়ক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন—রবিউল ইসলামের স্ত্রী মাহিনুর আক্তার (২৫) এবং তার দুই বছরের মেয়ে তাকিয়া ইসলাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহতদের বাড়ি মহাসড়ক সংলগ্ন কুটুম্বপুর পশ্চিমপাড়া এলাকায়। শনিবার সন্ধ্যায় মাহিনুর তার ছোট কন্যাকে নিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় ঢাকা অভিমুখী একটি দ্রুতগামী প্রাইভেটকার হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মা-মেয়ের ওপর উঠে যায়। এরপর গাড়িটি মহাসড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মা মাহিনুর আক্তার ও তার শিশু কন্যার মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনার সময় প্রাইভেটকারে থাকা তিনজনও আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক নয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ দুটি উদ্ধার করি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আহতরা বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।”
তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এ অংশে যানবাহনগুলো অতিরিক্ত গতিতে চলে। পর্যাপ্ত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। স্থানীয়দের দাবি, মহাসড়কের সংলগ্ন গ্রামগুলোতে স্পিড ব্রেকার স্থাপন এবং পথচারীদের জন্য নিরাপদ পারাপারের ব্যবস্থা জরুরি।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “প্রাইভেটকারটি খুব দ্রুতগতিতে আসছিল। হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মা ও মেয়েকে চাপা দেয়। ঘটনাটি আমাদের চোখের সামনেই ঘটেছে, কিন্তু কিছু করার সুযোগ ছিল না।”
কুমিল্লার চান্দিনার এই দুর্ঘটনা আবারও প্রমাণ করল সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা। একদিকে অসচেতন চালক, অন্যদিকে পর্যাপ্ত সড়ক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় প্রায়ই এ ধরনের মর্মান্তিক প্রাণহানি ঘটছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু আইন প্রয়োগ নয় সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ জনগণেরও সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি।
Leave a comment