Home আন্তর্জাতিক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে থাই-কম্বোডিয়া সীমান্ত সংঘাত, বাস্তুচ্যুত পৌনে দুই লাখ
আন্তর্জাতিক

ভয়াবহ রূপ নিয়েছে থাই-কম্বোডিয়া সীমান্ত সংঘাত, বাস্তুচ্যুত পৌনে দুই লাখ

Share
Share


থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার শতবর্ষী সীমান্ত বিরোধ কেন্দ্র করে শুরু হওয়া সংঘাত তৃতীয় দিনে এসে আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে এবং নতুন নতুন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। পাল্টাপাল্টি হামলায় উভয় দেশে সেনাসদস্য ও বেসামরিক নাগরিকসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে মানুষ, সব মিলিয়ে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৭৫ হাজার ছাড়িয়েছে। কম্বোডিয়া অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও তাতে শীতল সাড়া দিয়েছে ব্যাংকক, যা এই সংঘাতকে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে।
শনিবার সংঘাতের কেন্দ্রস্থল থেকে শতাধিক কিলোমিটার দূরে থাইল্যান্ডের উপকূলীয় প্রদেশ ত্রাত এবং কম্বোডিয়ার পুরসাত প্রদেশে নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। থাই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলমান সংঘাতে তাদের ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক ও ৬ জন সেনা নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, প্রথম দুই দিন নীরব থাকার পর কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় স্বীকার করেছে যে, থাইল্যান্ডের হামলায় তাদের ৮ জন বেসামরিক নাগরিক ও ৩ জন সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে বেসামরিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগ তুলেছে। কম্বোডিয়ার অভিযোগ, থাই বাহিনী বিতর্কিত গুচ্ছ (ক্লাস্টার) বোমা ব্যবহার করছে। অন্যদিকে, থাইল্যান্ড বলছে, কম্বোডিয়ার সেনারা তাদের ভূখণ্ডের গ্রাম লক্ষ্য করে কামান ও রকেট হামলা চালাচ্ছে। এই মানবিক সংকটের চিত্র ফুটে উঠেছে থাইল্যান্ডের একটি অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে। সেখানে আশ্রয় নেওয়া ৫১ বছর বয়সী এক নারী জানান, গোলার শব্দে ভয় পেয়ে তিনি পালিয়ে এসেছেন, কিন্তু খামারের পশুপাখি দেখতে রেখে আসা স্বামীর সঙ্গে এখন আর যোগাযোগ করতে পারছেন না।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবার এই সংকট নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলো সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। তবে থাইল্যান্ড তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় অনাগ্রহী। থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যুদ্ধবিরতির জন্য কম্বোডিয়াকে আগে আন্তরিকতা দেখাতে হবে। ১৯০৭ সালে নির্ধারিত সীমানা নিয়ে এই বিরোধের জেরে সম্প্রতি একজন থাই সেনা আহত হওয়া এবং উভয় দেশের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের ঘটনার পরই এই সর্বশেষ সংঘাতের সূত্রপাত ঘটে, যা এখন পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তোলার হুমকি দিচ্ছে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

পুরোনো বিমানবন্দরে ‘এয়ার শো’ দেখতে মানুষের ঢল

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে আয়োজিত বিশেষ ‘এয়ার শো’ দেখতে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই মানুষের ঢল নেমেছে। উৎসবমুখর পরিবেশে...

বিজয় দিবসকে ঘিরে দেশজুড়ে র‌্যাবের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রস্তুতি

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সারাদেশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, জনসমাগমস্থল এবং বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত...

Related Articles

সিলেটে তরুণদের বিদেশমুখিতা বাড়ছে, কারণ ….

সিলেটকে বলা হয় ‘দ্বিতীয় লন্ডন’। যুক্তরাজ্যে সিলেটি প্রবাসীদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতির কারণে এই...

রাশিয়ার রোস্তভে ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলা: নিহত ৩

রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ অঞ্চলে রাতভর চালানো ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় অন্তত তিনজন নিহত...

ওবায়দুল কাদের ও সাদ্দামসহ ৭ শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

জুলাই–আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দমনে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আওয়ামী...

ভারী বৃষ্টিতে রক্তিম রঙে ঢেকে গেল ইরানের হরমুজ দ্বীপের সমুদ্র

ইরানের পারস্য উপসাগরে অবস্থিত হরমুজ দ্বীপে ভারী বৃষ্টির পর স্থানীয় বাসিন্দা ও...