কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা এবং নেতৃত্ব সংকটে নিমজ্জিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে আসছেন শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। দীর্ঘ ৪৪ বছর দলের নেতৃত্ব দেওয়ার পর চরম দুঃসময়ের মধ্যে থাকা দলের ভার পুত্রের হাতে তুলে দেওয়ার এই সিদ্ধান্তটি শেখ হাসিনা একটি গোপন বৈঠক থেকে চূড়ান্ত করেছেন বলে দলের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর যখন দলটি চতুর্মুখী চাপের মধ্যে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই করছে, ঠিক তখনই এই সিদ্ধান্ত এলো।
এই সিদ্ধান্তটি দলের মধ্যেই ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি বড় অংশ সব সময়ই সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরোধী। তাদের অভিযোগ, দেশের তৃণমূল রাজনীতিতে জয়ের কোনো যোগাযোগ বা ঘনিষ্ঠতা নেই। উপরন্তু, বিগত সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের কারণে তিনি একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। এমনকি, শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পরপরই দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে তিনি দলের ভেতরেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন এবং তার সেই আচরণকে অনেক নেতা ‘স্বার্থপরতা’ হিসেবেই দেখছেন।
বর্তমানে আওয়ামী লীগ শুধু নেতৃত্ব সংকটেই ভুগছে না, দলটি ‘জুলাই গণহত্যায়’ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তীব্র আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও রয়েছে। প্রতিনিয়ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কল রেকর্ডের মতো তথ্যপ্রমাণ সামনে আসছে, যার ফলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিচারিক রায় হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন দলের নেতারা। এমন এক পরিস্থিতিতে, অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং বিতর্ককে ছাপিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়কে দলের নেতৃত্বে নিয়ে আসার এই পদক্ষেপকে বিশ্লেষকরা রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্য শেখ হাসিনার একটি ঝুঁকিপূর্ণ কৌশল হিসেবেই বিবেচনা করছেন।
Leave a comment