ইসলামী রাষ্ট্র গঠিত হলে সমাজে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, ধর্ষক, খুনি ও লুটেরাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে বলেই তারা এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে—এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ইসলামী রাষ্ট্র নারীর মৌলিক অধিকার খর্ব করে না, বরং সকল নাগরিককে—ধর্ম ও লিঙ্গ নির্বিশেষে—সমান মর্যাদা দেয়। শুক্রবার রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের রুকন সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
জামায়াতের আমির আরও বলেন, ইসলামী রাষ্ট্র নারীকে বাজারে যাওয়া, হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রাখে না। ইসলাম পৃথিবীর একমাত্র অসাম্প্রদায়িক ধর্ম বলেও দাবি করেন তিনি। বক্তব্যে বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যারা নিজ দলের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ, তারা কখনোই জাতীয় শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। জামায়াত ৫৪ বছরে কোনো নাগরিকের প্রতি জুলুম করেনি, দলীয় নেতাকর্মীদের কেউ চাঁদাবাজি বা সন্ত্রাসে জড়িত নয় এবং ভবিষ্যতেও হবে না।
তিনি আরও দাবি করেন, জামায়াতের কোনো নেতার বিদেশে বেগমপাড়া বা পিসিপাড়া নেই এবং কোনো নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। যারা দেশপ্রেমহীন, তারাই বিদেশে দ্বিতীয় ঠিকানা গড়ে তোলে। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল এবং উপস্থিত ছিলেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ সিনিয়র নেতারা।
এই সম্মেলনের অন্য অংশে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সব সরকারই ভোটের নামে প্রহসনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে। জামায়াত নির্বাচন চায়, তবে ভোটকেন্দ্র দখল নয়। সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক চর্চা ও প্রতিটি ভোটের মূল্যায়নের জন্য তিনি ‘প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন’ (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন দাবি করেন।
এ সময় বিএনপির নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, জামায়াত যখন সংস্কারের কথা বলে, তখন কেউ কেউ একে ষড়যন্ত্র আখ্যা দেয়। অথচ যারা তথাকথিত নির্বাচনে অংশ নিতে চায়, তারাই আসলে জনগণকে প্রতারিত করছে। ভোট চুরির চিন্তা না থাকলে কেউ সংস্কারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারে না।
সম্মেলনের আরেক বক্তা, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘হাসিনার পতনের পর’ আরেকটি দল নিজেদেরকে দেশের মালিক মনে করতে শুরু করেছে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা দেশকে পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে, তাদের পরিণতিও হবে হাসিনার মতোই।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
Leave a comment