বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে সিলেটে আজ শক্তিশালী অবস্থান জানাল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “নতুন বাংলাদেশের জন্য, নতুন সংবিধানের জন্য আমরা রাজপথে নেমেছি। এই সংবিধানে থাকবে সবার অধিকার, সিলেটের মর্যাদা, এবং বৈষম্যের অবসান।”
শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে বিকেলে চৌহাট্টা এলাকা থেকে এনসিপির নেতা-কর্মীরা পদযাত্রা শুরু করেন, যা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে পথসভায় গিয়ে শেষ হয়।
নাহিদ ইসলাম সিলেটকে ইতিহাস, সম্পদ ও আন্দোলনের জনপদ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “এই সিলেট শহীদদের রক্তে রাঙানো। এই জনপদ থেকেই আমরা নতুন রাষ্ট্রের ডাক দিচ্ছি।” তিনি প্রবাসীদের অবদান স্মরণ করে বলেন, “সিলেট শুধু অর্থে নয়, মননে, ইতিহাসে, আন্দোলনে—সর্বদা নেতৃত্ব দিয়েছে।”
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বক্তব্যে আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে বলেন, “চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজদের অধ্যায় শেষ হয়েছে। এনসিপি এসেছে জনতার অধিকার ফিরিয়ে দিতে।” তিনি আরও বলেন, “মুজিববাদের নতুন পাহারাদারদের আমরা রুখে দাঁড়াব। এনসিপি কোনো ক্ষমতার দালাল নয়, জনগণের সংগঠন।”
মঞ্চে বক্তব্য দেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীও। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা বিএনপির বিরুদ্ধে নই, কিন্তু বাংলাদেশে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, সিন্ডিকেটের কোনো ঠাঁই নেই। যারা আমাদের সঙ্গে থাকবে, তাদের এই শর্ত মানতে হবে—জনগণের পক্ষে থাকতে হবে।”
পথসভা সঞ্চালনা করেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা, যার মধ্যে ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক অর্পিতা শ্যামা দেব, জাহেদুল ইসলাম, নুরুল হুদা জুনেদ, নাজিম উদ্দিন শাহান প্রমুখ।
এর আগে এনসিপির প্রতিনিধি দল সুনামগঞ্জে কর্মসূচি শেষে সিলেটে ফিরে আসেন এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। রাতে এনসিপি নেতারা হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারতের পরিকল্পনা করেছেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
রাজনীতির চেনা ছক ভাঙার ডাক দিয়ে এনসিপি এখন মাঠে। সিলেটের পথসভা সেই ঘোষণারই উচ্চকণ্ঠ প্রকাশ।
Leave a comment