চলতি জুলাই মাসের প্রথম ১৬ দিনেই প্রবাসী আয় বেড়েছে ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, ১ থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত বৈধ পথে দেশে এসেছে ১৪২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ কোটি ২০ লাখ ডলার বেশি। তখন এ সময়ের প্রবাসী আয় ছিল ১৩১ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
এই প্রবণতা প্রমাণ করছে, প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলকে ক্রমেই বেশি আস্থার জায়গা হিসেবে দেখছেন। ঠিক তার আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও প্রবাসী আয়ের নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। ওই সময়ে দেশে বৈধ পথে মোট ৩০ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার এসেছে, যা আগের অর্থবছর ২০২৩-২৪ সালের তুলনায় প্রায় ২৬ শতাংশ বেশি। তখন প্রবাসী আয় এসেছিল ২৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার।
প্রবাসী আয়ের এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ পরিস্থিতিকে স্বস্তিদায়ক করে তুলছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি ও আমদানি তুলনামূলক কম থাকায় সামগ্রিকভাবে ডলারের চাহিদা কিছুটা কমে এসেছে। এর ফলে মার্কিন ডলারের দাম সামান্য হলেও কমেছে। এই পরিস্থিতিতে ডলার বাজারে ভারসাম্য আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কিনছে। গত রোববার ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং মঙ্গলবার ও বুধবার মিলিয়ে আরও ৪৮ কোটি ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বর্তমানে প্রতি ডলারের দাম ১২০ থেকে ১২৫ টাকার মধ্যে স্থিতিশীল রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ডলার লেনদেন হয়েছে ১২১ টাকা ২০ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৩০ পয়সায়, যেখানে গত জুনের শুরুতে তা ছিল ১২২ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ১২৩ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ ডলারের দামে কোনো বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়নি।
ব্যাংক খাতের কর্মকর্তারা বলছেন, বাজারে ডলার সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় এখন আমদানি সংক্রান্ত কঠোরতা শিথিল করার সময় এসেছে। বিশেষ করে বিলাসপণ্য আমদানিতে আরোপিত বাড়তি বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া গেলে ব্যবসা-বাণিজ্যে গতিশীলতা ফিরে আসবে বলে তাঁদের অভিমত।
প্রবাসী আয়ের এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও সামষ্টিক অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা আসবে বলে আশা করছেন অর্থনীতিবিদরাও।
Leave a comment