কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আনিছুর রহমানকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে জামায়াতের রাজীবপুর উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মো. আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বহিষ্কৃত আনিছুর রহমান সম্প্রতি আলোচনায় আসেন একটি অডিও ও ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ার পর, যেখানে তাকে ২০১৩ সালের একটি মামলায় অব্যাহতির আশ্বাস দিয়ে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করতে শোনা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ১ মিনিট ২১ সেকেন্ডের অডিও রেকর্ড এবং ১ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে ওই চাঁদা দাবির আলাপ প্রকাশ্যে এলে গণমাধ্যমে তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিষয়টি দায়িত্বশীলদের নজরে আসার পর প্রাথমিকভাবে খোঁজখবর নিয়ে আনিছুর রহমানকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা আনিছুরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করবে। রাজীবপুর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আজিজুর রহমান বলেন, আনিছুর রহমান জামায়াতের কোনো পদধারী নেতা নন, বরং শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের একজন কর্মী। তবে তার কর্মকাণ্ডে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তবে আনিছুর রহমান জানান, তিনি এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক নোটিশ পাননি এবং দল থেকেও কেউ তাকে মৌখিকভাবে জানায়নি। বহিষ্কারের বিষয়টি গণমাধ্যমে জেনে তিনি বিস্মিত হয়েছেন বলে জানান।
এদিকে স্থানীয় পর্যায়ে অভিযোগ রয়েছে, আনিছুর রহমান তার প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়মে জড়িত ছিলেন। এমনকি তার নামে ভুয়া স্কুল খুলে একাধিক পরিবারকে প্রতারণার মাধ্যমে নিঃস্ব করার অভিযোগও উঠেছে, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একদিকে সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষায় এমন সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলেও অন্যদিকে স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে দায় এড়ানোর প্রবণতা স্পষ্ট।
ঘটনার পর থেকে এলাকাজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এটা রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ শুদ্ধি অভিযানেরই অংশ হওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে সাধারণ জনগণ প্রতারণার শিকার না হয়।
Leave a comment