পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেমেছে দলটি। শনিবার লাহোরের রাইউইন্ড এলাকায় এক বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্দোলনের সূচনা ঘোষণা করেন খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর।
গান্দাপুর জানান, এই আন্দোলন ৫ আগস্ট চূড়ান্ত রূপ পাবে। কারণ ওই দিন ইমরান খানের কারাবন্দি থাকার দুই বছর পূর্ণ হবে। এর আগেই কারাগার থেকে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা পাঠিয়ে আন্দোলন চূড়ান্ত করতে বলেন ইমরান খান।
পিটিআইয়ের আন্দোলনের প্রস্তুতি সম্পর্কে ইমরানের বোন আলেমা খান বলেন, আন্দোলনের মূল পরিকল্পনা ইমরান খানের নেতৃত্বেই হচ্ছে এবং পুরো পরিবার এতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে। আলেমা দাবি করেন, যাঁরা এই রাজনৈতিক সংগ্রামের ভার বইতে পারবেন না, তাঁদের দলের বাইরে চলে যাওয়ার কথাও বলেছেন ইমরান।
দলটির মুখপাত্র ওয়াকাস আকরাম জানান, আন্দোলনের প্রথম ধাপে দেশজুড়ে প্রদেশ ও জেলায় জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারবিরোধী দাবিগুলো আরও জোরালো করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী গান্দাপুর আন্দোলনের সময় অস্ত্র বহনের কথাও বলেন। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ওয়াকাস জানান, গান্দাপুর আত্মরক্ষার অধিকার থেকেই এমন মন্তব্য করেছেন এবং কেউ যেন তা ভুলভাবে না নেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারান ইমরান খান। এরপর থেকে পিটিআই নানা ইস্যুতে ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ চালিয়ে আসছে। ২০২৩ সালের আগস্টে দুর্নীতিসহ নানা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন ইমরান।
এদিকে পিটিআইয়ের কারাবন্দি পাঁচ নেতা—শাহ মাহমুদ কুরেশি, এজাজ চৌধুরী, ওমর শরফরাজ চিমা, ইয়াসমিন রশিদ ও মিয়াঁ মাহমুদুর রশিদ—এক খোলা চিঠিতে পাকিস্তানে নতুন নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন। চিঠিতে তাঁরা ১৯৭০ সালের রাজনৈতিক সংকট থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান এবং বলেন, তা না হলে ভারত তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সুবিধা পেয়ে যাবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তানে অবনতি ঘটছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির। পাশাপাশি কাবুল-করাচি সম্পর্ক নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন নেতারা।
পিটিআইয়ের আন্দোলন রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। ৫ আগস্টের আগে পাকিস্তানের রাজনীতি আরও উত্তাল হওয়ার আভাস দিচ্ছে বিশ্লেষকেরা।
Leave a comment