নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বয়সকে হার মানিয়ে ৫২ বছর বয়সে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আলোচনায় আসা দেলোয়ার হোসেন এবার ইংরেজিতে অকৃতকার্য হয়েছেন। তবুও তিনি দমে যাননি। জানিয়েছেন, আগামী বছর আবারও পরীক্ষায় অংশ নেবেন এবং পাস করেই ছাড়বেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সারাদেশে একযোগে এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলে দেলোয়ার হোসেন নিজের ফল জানার পর বলেন, “সব বিষয়ে পাস করেছি, শুধু ইংরেজিতে ফেল করেছি। মনটা খারাপ, তবে হাল ছাড়িনি। ইনশা আল্লাহ পাস করবই।”
দেলোয়ার হোসেন বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। বাড়ি জামনগর পশ্চিমপাড়া গ্রামে। এবারের এসএসসি পরীক্ষা তিনি দিয়েছেন বাগাতিপাড়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে।
জানান, ছাত্রজীবনে বেশ মেধাবী ছিলেন। ১৯৮৫ সালে প্রাথমিক স্তরে বৃত্তি এবং ১৯৮৮ সালে জামনগর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে জুনিয়র বৃত্তি পেয়েছিলেন। ১৯৯০ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেও অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বহিষ্কৃত হন। এরপর পড়াশোনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলে সংসার জীবনে মনোনিবেশ করেন।
পরিবারের অন্য সদস্যরা উচ্চশিক্ষা অর্জন করায় দেলোয়ার মাঝেমধ্যে শিক্ষাগত অপূর্ণতার বোধে ভুগতেন। সেখান থেকেই ফের পড়াশোনায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত। জনপ্রতিনিধির ব্যস্ততা সামলেও নিয়মিত প্রস্তুতি নিয়েছেন পরীক্ষার জন্য।
দেলোয়ার বলেন, “শিক্ষা কোনো বয়সের বিষয় না। আমি পড়তে চাই, বুঝে নিতে চাই, এবং প্রমাণ করতে চাই—ইচ্ছা থাকলে বয়স বাধা নয়।”
স্থানীয়ভাবে তাঁর এই উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে। অনেকেই তাঁকে উৎসাহ দিয়েছেন এবং ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন। এখন তিনি নতুন করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন আগামী পরীক্ষার জন্য। তাঁর ভাষায়, “হার মানিনি, এবার আরও ভালো করে প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় বসব।”
Leave a comment