বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় বাড়িতে ঢুকে দুর্বৃত্তরা সৌদি প্রবাসীর বাবা ও স্ত্রীকে হাত-পা, মুখ বেঁধে শ্বাসরোধ হত্যা করেছে ।
হত্যার আগে গৃহবধূকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’ করেছে তারা। তবে দুর্বৃত্তরা গৃহবধূর সাত বছরের শিশুকন্যাকে স্পর্শ করেনি । এমনকি ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করলেও কিছুই নেয়নি। তবে শিশুটি বলছে, বাড়িতে চারজন লোক ঢুকেছিল।
উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীমন্ডপ পূর্বপাড়া গ্রামের বাড়িতে মঙ্গলবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। জোড়া খুনের এ ঘটনায় পুরো গ্রামে দেখা দিয়েছে শোক ও আতঙ্ক ।
দুপচাঁচিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার আলহাজ উদ্দিন জানান, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে হত্যার আগে গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এরপরও ডাক্তারি রিপোর্ট পেলে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
নিহতরা হলেন- বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীমন্ডপ পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত পানাউল্লাহ পঁচার ছেলে আফতাব হোসেন (৭০) ও তার সৌদি প্রবাসী ছেলে শাহজাহান আলীর স্ত্রী রিভা আকতার (৩০)
স্থানীয়রা জানান, সৌদি আরবে চাকরি করেন শাহজাহান আলী। লক্ষ্মীমন্ডপ পূর্বপাড়া গ্রামের বাড়িতে তার বৃদ্ধ বাবা আফতাব উদ্দিন, স্ত্রী রিভা আকতার ও সাত বছরের মেয়ে মালিহা বসবাস করেন। মঙ্গলবার রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর এক ঘরে রিভা তার মেয়ে মালিহা ও অন্য ঘরে আফতাব উদ্দিন ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের কোনো এক সময় ওই বাড়িতে ঢোকে চারজনের একটি দল ।
তারা বৃদ্ধ আফতাব উদ্দিন ও ছেলের বউ রিভা আকতারকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। এরপর দুজনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। দুর্বৃত্তরা ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করলেও টাকা, গহনা বা অন্য কিছু নেয়নি। শিশু মালিকাকেও স্পর্শ করেনি তারা। শিশুটি শুধু বলতে পারে, বাড়িতে চারজন লোক ঢুকেছিল।
বুধবার সকালে শিশু মালিহার কান্নার আওয়াজে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে শ্বশুর ও পুত্রবধূর হাত, পা ও মুখ বাঁধা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে। স্থানীয়দের ধারণা, হত্যার আগে গৃহবধূ রিভা আকতারকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেছে তারা ।
দুপচাঁচিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আলহাজ উদ্দিন জানান, প্রতিবেশী নারীদের দিয়ে সুরতহাল করানোর সময় গৃহবধূ রিভার শরীরে ধর্ষণের আলামত পেয়েছেন তারা। এরপরও ডাক্তারি রিপোর্টে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ওসি ফরিদুল ইসলাম জানান, সৌদি প্রবাসী শাহজাহান আলীর বাবা ও স্ত্রীকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে এবং শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বৃদ্ধের মাথায়। ঘর থেকে কিছু লুটের তথ্য পাওয়া যায়নি। হত্যার আগে গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না, তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হত্যাকাণ্ডের পেছনে পূর্ব শত্রুতা, পারিবারিক বিরোধ বা চুরি-ডাকাতির বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত চলছে।
এদিকে ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও থানা পুলিশ । এ জোড়া খুনের কারণ উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
Leave a comment