পবিত্র ঈদুল আজহার প্রাক্কালে যখন মুসলিম বিশ্ব উৎসবের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডিতে আবারও রক্তাক্ত হলো ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দখলদার ইসরায়েলের চালানো বর্বর বিমান হামলায় অন্তত ৩৭ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ।
সংস্থাটির মুখপাত্র মোহাম্মদ আল-মুঘাইর বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, “আজ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ৩৭ জন শহীদ হয়েছেন।” মৃতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের কাছে ঈদ যেমন আনন্দ ও ত্যাগের প্রতীক, তেমনি গত প্রায় দুই বছর ধরে তা রূপ নিয়েছে এক দুঃসহ যন্ত্রণায়। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলের দখলকৃত অঞ্চলগুলোতে হামলার পর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধ আজও চলছে। সেই যুদ্ধেই প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৫৫ হাজার ফিলিস্তিনি, যাদের অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক। আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক মানুষ। ধ্বংস হয়ে গেছে ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল ও রাস্তাঘাট।
গাজা এখন এক মৃতপ্রায় নগরী। ঈদের উৎসব যেখানে মুসলিম সমাজে পরিবার ও সহমর্মিতার এক অপূর্ব বন্ধন রচনা করে, সেখানে গাজার মানুষগুলো ঈদের দিনে হারাচ্ছেন আপনজন, হারাচ্ছেন জীবনের সব স্বাভাবিকতা।
এই দীর্ঘ যুদ্ধ ও মানবিক বিপর্যয় থামাতে আরব বিশ্ব থেকে শুরু করে ইউরোপের নানা দেশ এখন সরব হলেও কার্যকর কোন আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ আজও দৃশ্যমান নয়। বরং দখলদার ইসরায়েল প্রতিনিয়ত অমানবিক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে।
ঈদের মতো একটি পবিত্র ও আনন্দঘন সময়েও যখন মৃত্যুর মিছিল থামছে না, তখন মানবতা, ন্যায়বিচার ও আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার প্রশ্নে দুনিয়াজুড়ে প্রতিবাদের ঢেউ আরও জোরদার হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র: দ্য নিউ আরব
Leave a comment